ডাক বিভাগের বিশেষ গাড়িতে নাটোরের আম যাচ্ছে ঢাকায়

ডাক বিভাগের বিশেষ গাড়িতে বিনা খরচায় আম যাচ্ছে ঢাকায়। আজ রোববার সকালে নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলা আমবাজারে। ছবি: প্রথম আলো
ডাক বিভাগের বিশেষ গাড়িতে বিনা খরচায় আম যাচ্ছে ঢাকায়। আজ রোববার সকালে নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলা আমবাজারে। ছবি: প্রথম আলো

ডাক বিভাগের চালু করা বিশেষ কাভার্ড ভ্যানে ঢাকায় যাচ্ছে নাটোরের আম। করোনা পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলের আম বিপণনের বিষয়টি মাথায় রেখে আমচাষিদের মৌসুমি ফল পরিবহন সুবিধায় বিশেষ এই কার্যক্রম চালু করেছে ডাক বিভাগ। এর ফলে আম পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যয় কমেছে। বাড়তি সুবিধা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কৃষক সংগঠনের নেতৃারা।

কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেড় দশক ধরে নাটোরে ব্যাপক হারে আমের বাগান তৈরি হয়েছে। এসব বাগান থেকে প্রতিবছরই বিপুল পরিমাণ আম উৎপাদিত হয়। এলাকার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখানকার আম রপ্তানি করা হয়। জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা আড়তে প্রতিদিন দুই থেকে পাঁচ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হয়।

নাটোর জেলার সর্ববৃহৎ তমালতলা আমের আড়ত এলাকার নূরপুর মালঞ্চি আইএফএম কৃষক সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মাহাবুব হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার পরিবহন এবং ক্রেতাসংকটের মধ্যে আম বিপণন নিয়ে আমচাষি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন। ডাক বিভাগ থেকে বিশেষ গাড়িতে আম পরিবহন কার্যক্রম চালু করায় এ দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও কেটেছে। তিন দিন হলো এই গাড়ি ঢাকার উদ্দেশে চলাচল করছে। ফলে নাটোর থেকে কৃষকদের আম ঢাকায় উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পরিবহন খরচ কমে যাওয়ায় আমের ভালো দাম পেয়ে এখানকার কৃষকেরাও বেশ খুশি।

ঢাকা জিপিওর সিনিয়র পোস্টমাস্টার খন্দকার শাহনূর সাব্বির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কৃষকদের স্বার্থে তাঁদের সহায়তা দিতে সরকারি সিদ্ধান্তে ডাক বিভাগ এই বিশেষ গাড়ির কার্যক্রম চালু করেছে। একেবারে বিনা ভাড়ায় কৃষকদের আম ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে প্রতিদিন ডাক বিভাগের চার-পাঁচটি গাড়ি চালু রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ কমে যাওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা আমের বাড়তি দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এর আগে নাটোরের কৃষকেরা ঢাকায় লিচু পরিবহনেও ডাক বিভাগের পরিবহন সুবিধা পেয়েছেন।

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয়েছে। এসব বাগান থেকে ৭৭ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বাগাতিপাড়ায় ১ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে, যা জেলার মোট বাগানের ২২ দশমিক ১৯ শতাংশ।