মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত কামরান
সিলেটে মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে করোনায় মারা যাওয়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে (৬৯)। সোমবার নগরীর মানিকপীর টিলা কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেলা সোয়া দুইটার দিকে মানিকপীর টিলায় স্বল্প পরিসরে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিলেটের জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতারা অংশ নেন। জানাজা শেষে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে সাবেক এই মেয়রের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
প্রথম জানাজা হয় জোহরের নামাজের পর নগরীর ছড়ারপার এলাকায় তাঁর বাসাসংলগ্ন জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। এর আগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কামরানের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি ছড়ারপারের বাসায় প্রবেশ করে। সেখানে আগে থেকেই দলীয় নেতা–কর্মীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষজন অপেক্ষায় ছিলেন। বাসার সামনে অ্যাম্বুলেন্সটি পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন দলীয় নেতা–কর্মী ও প্রতিবেশীরা। পরে বাসায় মরদেহ গোসল করিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়।
সোমবার সকাল সাতটার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে থেকে অ্যাম্বুলেন্স করে কামরানের মরদেহ নিয়ে সিলেটের পথে রওনা হন ঢাকায় থাকা তাঁর বড় ছেলে আরমান আহমদসহ পরিবারের সদস্যরা।
সাবেক মেয়র কামরানের মরদেহ দাফনের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী মানিকপীর টিলা করবস্থানে মা ও বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের টানা দুবারের মেয়র কামরান ৫ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরদিন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাঁর শরীর আরও খারাপ হলে ৭ জুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৮ জুন তাঁর শরীরে প্লাজমাথেরাপিও দেওয়া হয়েছিল। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সোমবার রাত তিনটার দিকে কামরানের মৃত্যু হয়।
তিন দিনের শোক কর্মসূচি
বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। সোমবার এক শোকবার্তায় বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তিন দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
শোকবার্তায় আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মতো একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ, একজন দক্ষ জনপ্রতিনিধিকে হারিয়ে সিলেট নগরবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করুন।’