মাদারীপুরে কোভিড শনাক্ত ৪০০ ছাড়াল

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

মাদারীপুরে করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। আজ মঙ্গলবার দুই দফায় শনাক্ত হয়েছে ৭০ জন। এ নিয়ে জেলায় কোভিডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৩। আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলার সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, আজ দুপুরে ও সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে দুই দফা করোনার নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। প্রথম দফায় ৭৫ জনের নমুনায় পজিটিভ আসে ২৩ জনের। এরপর দ্বিতীয় দফায় আরও ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে। এতে পজিটিভ আসে ৪৭ জনের।

এ নিয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ৭০ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৯ জন শনাক্ত হয়েছে সদর উপজেলায়। এর মধ্যে সদর থানা-পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) দুজন পুলিশ সদস্য, পুলিশ লাইনসের দুজন সদস্য, ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্যসহ সদর হাসপাতালের একজন নার্স রয়েছেন। এ ছাড়া রাজৈর উপজেলায় থানার ২ পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া কালকিনি উপজেলায় ৮ জনসহ শিবচর উপজেলায় ৮ জন কোভিডে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৮ মার্চ সারা দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া তিনজনের একজন ছিলেন মাদারীপুরে ইতালিফেরত এক প্রবাসী। এরপর গত দুই মাসে করোনা শনাক্ত রোগী ছিল ৫০ জন। ১৩ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত এই ১৬ দিনে ৫০ জন শনাক্ত হলে রোগী সংখ্যা দাঁড়ায় ১০০। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা ছিল ১৩১। গত এক সপ্তাহে নতুন করে শনাক্ত হয় ১৬৯ জন।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ মীর রিয়াজ আহাম্মেদ বলেন, বর্তমানে সদর উপজেলায় কোভিডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩৬, রাজৈর উপজেলায় ১২৯, কালকিনি উপজেলায় ৮৬ ও শিবচর উপজেলায় ৭২। জেলায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৩৬ জনের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। জেলায় করোনা থেকে সেরে উঠেছেন ১১৯ জন এবং মারা গেছেন ৮ জন।

জেলায় এ পর্যন্ত ২৪ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ সম্পর্কে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবদুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৭ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন ২৪ জন ছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হাইওয়ে পুলিশের ৮ জন সদস্য রয়েছেন। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সংস্পর্শে থাকা অন্তত ১৫০ জনকে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘লোকজনকে ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করা গেলেই করোনার সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। তাই আমরা মানুষকে ঘরে রাখতে ও সংক্রমণের হার বিবেচনায় ৪টি পৌরসভার ২০টি ওয়ার্ড ও ৪টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। রেড জোনে থাকা এলাকাগুলোয় কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। আগামী দু–এক দিনের মধ্যেই আমরা জোন ধরে কাজ শুরু করব। আশা করছি এতে সংক্রমণ কমে আসবে।’