ঢাবির করোনা ল্যাব ফের চালুর দাবি বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে স্থাপিত হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া করোনা শনাক্তকরণের পিসিআর ল্যাব (গবেষণাগার) ফের চালুর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কারও করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তাঁরা যেন দ্রুত পরীক্ষা করাতে পারেন, এ জন্য ল্যাবের সঙ্গে একটি নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করারও পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

করোনা মোকাবিলায় সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে চিঠি দিয়েছে সাদা দল। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো সাদা দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সাদা দল চিঠিতে আরও পরামর্শ দিয়েছে, নমুনা সংগ্রহ ও করোনা পরীক্ষার ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনে সেবা গ্রহণকারীর কাছ থেকে ন্যূনতম ফি গ্রহণ করা যেতে পারে।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে ৩১ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেস (কার্স) ভবনে চলে করোনা পরীক্ষার ল্যাবটি। পরে আর্থিক সহযোগিতা না পাওয়ায় ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ল্যাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করলেও তা স্বীকার করেননি উপাচার্য।

উপাচার্যকে লেখা চিঠিতে সাদা দল বলেছে, সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হলে তাঁকে বা তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি ও নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে হবে। এ জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা যেতে পারে।

সাদা দল বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আইসিইউ–সুবিধা আছে এবং করোনা চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত—এমন এক বা একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে দ্রুত এমওইউ সম্পাদন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হেলথ ইনস্যুরেন্স কাভারেজ পাওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় রাখতে হবে। যাঁদের হালকা উপসর্গ থাকবে, তাঁরা যেন প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, সে জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রকে আপৎকালীন করোনা সেন্টারে রূপান্তর করা যেতে পারে। এ জন্য অন্তত ২০টি বেড প্রস্তুতসহ অক্সিজেন ও কিছু ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা রাখতে হবে। চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক ও সহায়ক স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে নির্বিঘ্নে ও উৎসাহ নিয়ে সেবা দিতে আগ্রহী হন, সে জন্য তাঁদের পর্যাপ্ত সুরক্ষাসামগ্রীসহ প্রয়োজনে প্রণোদনা দিতে হবে।

চিঠিতে সাদা দল বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বা ঢাকা শহরের অন্যত্র বসবাসকারী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা যাতে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স–সুবিধা পেতে পারেন, এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে সব সময় প্রস্তুত রাখতে হবে। এই কাজে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাসগুলোও ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রকে একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপান্তর করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কেউ মারা গেলে তাঁর সৎকারের ব্যবস্থাসহ পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে। বিনা মূল্যে টেলিমেডিসিন সেবা কার্যক্রম, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা কার্যক্রম, স্পিচ ও ল্যাঙ্গুয়েজ–বিষয়ক টেলিথেরাপি সেবাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চলমান সেবাগুলো অব্যাহত রাখতে হবে।