বৃষ্টি উপেক্ষা করে 'লাল এলাকা'য় খাবার সরবরাহ

কখনো একটানা, কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি। এর মধ্যেই খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটছেন দুজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তাঁরা না গেলে হয়তো ১৫টি পরিবার অভুক্ত থাকবে। লাল এলাকায় (রেড জোন) অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় এসব পরিবারের খাবার সংগ্রহের উপায় নেই।

আজ বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় খাবারগুলো বিতরণ করা হয়। এগুলো বিতরণ করেন সদরের ইউএনও পঙ্কজ বড়ুয়া ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ বি এম মশিউজ্জামান।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ পর্যন্ত ৪০৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সদর উপজেলায় ১১৪ জন। এর মধ্যে পৌরসভার ৪, ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডেই অর্ধশতাধিক। করোনার সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়া রোধে এসব ওয়ার্ডের চারটি এলাকা যথাক্রমে পূর্ব পাইকপাড়া ও কালাইশ্রীপাড়া, মধ্যপাড়া এবং কাজীপাড়া লাল এলাকাভুক্ত করে প্রশাসন। গত শনিবার রাতে এসব এলাকা অবরুদ্ধ (লকডাউন) করা হয়। ২৭ জুন পর্যন্ত লকডাউন চলবে।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন জানান, ঢাকার বাইরে কোনো এলাকায় ১০ জন করোনা রোগী থাকলে তা রেড জোনভুক্ত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১৭ জন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ জন করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি রয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রে আরও জানা যায়, লাল এলাকায় জরুরি পণ্য ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট ও গণপরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। জরুরি প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে বলা হয়। লকডাউনের কারণে এসব এলাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া কয়েকটি পরিবার সহায়তার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করে। উপজেলা প্রশাসন যাচাই-বাছাই করে ১১টি পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ দুপুরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ইউএনও পঙ্কজ বড়ুয়া ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ বি এম মশিউজ্জামান পাইকপাড়ায় ৫টি, মধ্যপাড়া ও বর্ডার বাজার এলাকার ৫টি এবং কাজীপাড়ার ৫টি পরিবারের বাড়ি গিয়ে কাঁচাবাজারসহ খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন। এর আগে মঙ্গলবারও ১১টি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়।

ইউএনও পঙ্কজ বড়ুয়া ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ বি এম মশিউজ্জামান বলেন, রেড জোনে লকডাউনের কারণে খাবারের সমস্যায় যাঁদের ফোন পেয়েছেন, তাঁদের সরাসরি গিয়ে খাদ্যসহায়তা দিচ্ছেন তাঁরা। প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি করে ডাল ও আটা এবং ১টি করে নুডলসের প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। এই সাহায্য অব্যাহত থাকবে।