তরুণীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে তুলে দিল পুলিশ

রাত সাড়ে আটটা। রাস্তার পাশে খানিকটা নির্জন স্থান। সেখানে বসে ছিলেন অজ্ঞাতনামা এ তরুণী (১৮)। ফুসলিয়ে তাঁকে অন্যত্র নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন কয়েকজন যুবক। যেতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তখন আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তরুণীটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ডেকে এনে মায়ের কাছে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে।

ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের পানির ট্যাংক এলাকায় গত শুক্রবার রাতে। ওই তরুণীর বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরে। পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে চলে এসেছিলেন চাঁদপুরে।

পুলিশ জানায়, ওই তরুণীর বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর কয়েক বছর ধরে নারায়ণগঞ্জে একটি ভাড়া বাসায় মা ও ভাইবোনের সঙ্গে থাকেন তিনি। কয়েক মাস আগে এক দিনমজুরের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। এরপর স্বামীর বাড়িতে গেলেও বেশি দিন বনিবনা হয়নি। ফলে পুনরায় চলে আসেন মায়ের কাছে।

তরুণীটির মায়ের সংসারে অভাব আর অভাব। তাঁর মা এ বাড়ি-ও বাড়ি কাজ করে কোনোমতে সংসার চালান। ঠিকমতো খাবার ও কাপড় দিতে না পারায় প্রায়ই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হয় তরুণীটির। শুক্রবার দুপুরে মা-মেয়ের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে যান তরুণী। নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চে করে সন্ধ্যায় চলে আসেন মতলব দক্ষিণ উপজেলা শহরে। সেখানকার পানির ট্যাংক এলাকায় একটি দোকানের পাশে কিছুটা নির্জন স্থানে একাকী বসে ছিলেন। তখন বখাটে কয়েক যুবক কাছে গিয়ে তাঁকে ফুসলিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তরুণীটি যেতে আপত্তি জানালে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বিষয়টি টের পেয়ে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। তখন ওই যুবকেরা পালিয়ে যান।

মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার আইচ বলেন, খবর পেয়ে থানা-পুলিশের কয়েকজন সদস্য নিয়ে সেখানে যান তিনি। তাঁরা তরুণীটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে খেতে দেওয়া হয়। ওই তরুণীর দেওয়া তথ্য অনুসারে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের মাধ্যমে তাঁর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আজ শনিবার দুপুরে মেয়েটির মা, ফুফু ও ফুফা এখানে আসেন। এরপর তাঁদের কাছে তুলে দেওয়া হয় মেয়েটিকে। সঙ্গে কিছু খাবার ও নগদ টাকাও দেওয়া হয়।

তরুণীটির মা বলেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে তাঁর মেয়ে রক্ষা পেয়েছেন। তারা সময়মতো সেখানে না পৌঁছালে মেয়ের বড় বিপদ হতে পারত।