আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে এ ওয়ানের শ্রমিকদের মানববন্ধন। ছবি: প্রথম আলো
আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে এ ওয়ানের শ্রমিকদের মানববন্ধন। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার সাভারে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) এ ওয়ান নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরও বেতন পরিশোধ না করায় আজ রোববার তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

শ্রমিকদের দাবি ঈদুল ফিতরের বোনাসসহ পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। আর ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, তাঁরা দেড় মাসের বেতনসহ ভাতা পাবেন।

পুলিশ ও কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টার দিকে তিন শতাধিক শ্রমিক ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁরা ঈদ বোনাস ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানান। ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণে অপারগতা প্রকাশ করলে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল নিয়ে তাঁরা ডিইপিজেডসংলগ্ন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গিয়ে অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। শ্রমিকেরা বাধা উপেক্ষা করে সড়ক অবরোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে এবং লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর তাঁরা আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধন থেকে শ্রমিকেরা বলেন, গত জানুয়ারি মাস থেকে তাঁদের কারখানা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু তাঁদের বেতন ও নিয়ম অনুযায়ী ভাতা পরিশোধ করে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় তাঁরা ঈদুল ফিতরের বোনাসসহ জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বেতন পাওনা। এই পাঁচ মাসের মধ্যে তাঁদের ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে, যা বেতনের তুলনায় খুবই নগণ্য।

তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পেয়ে করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কারখানার ১ হাজার ১০০ শ্রমিক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকায় অন্য কোনো কারখানায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পারছেন না তাঁরা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, বকেয়া বেতন ও ভাতার জন্য শ্রমিকেরা পাঁচ মাস ধরে আন্দোলন করছেন। এরপরও ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ তাঁদের বেতন ও ভাতা পরিশোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে শ্রমিকেরা অনেক কষ্টে রয়েছেন।

ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আব্দুস সোবাহান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ করা হয়। এর মধ্যে শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন বাবদ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা দেড় মাসের বেতন পাবেন। সেই সঙ্গে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর নিয়ম অনুয়ায়ী অন্যান্য ভাতা দেওয়া হবে।

আব্দুস সোবাহান আরও বলেন, কারখানাটি বিক্রির চেষ্টা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কারখানা বিক্রি করা সম্ভব হলে শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধ করা হবে।