চকরিয়ায় জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে 'গরিবের ডাক্তারের' মৃত্যু

পল্লিচিকিৎসক শম্ভু দে। ছবি: সংগৃহীত
পল্লিচিকিৎসক শম্ভু দে। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে শম্ভু দে (৬৬) নামের এক পল্লিচিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। চকরিয়া ও আশপাশের এলাকায় শম্ভু দে ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি স্বল্পমূল্যে নিম্নবিত্ত মানুষের ভাঙা হাড় জোড়া দেওয়ার চিকিৎসা করতেন। তাঁর বাড়ি চকরিয়া পৌর শহরের হিন্দুপাড়া এলাকায়।

শম্ভু দের পরিবারের লোকজন বলেন, করোনার শুরু থেকে শম্ভু দে চকরিয়া পৌর শহরের ওশান সিটি মার্কেটে তাঁর চেম্বার খোলা রেখে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। তিনি ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগী ছিলেন। ১০-১২ দিন ধরে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। ১৩ জুন তিনি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। ১৫ জুন তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে ১৬ জুন থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অক্সিজেন পেলেও আইসিইউ সুবিধা পাননি তিনি। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।

শম্ভু দের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁর স্ত্রী রূপালী রানী দে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ছেলেদের একজন এমবিবিএস চিকিৎসক, অন্যজন আইন পেশায় আছেন।

শম্ভু দের বন্ধু ও চকরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পল্লিচিকিৎসক হলেও হাড় ভাঙার চিকিৎসায় শম্ভুর উচ্চতর প্রশিক্ষণ ছিল। আশির দশকে তিনি মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে চাকরি করেন। নব্বই দশকে তিনি দুবাইয়ের এনএমসি হসপিটালে চাকরি করেন। পরে ২০০০ সালের শুরুতে দেশে ফিরে গ্রামে চিকিৎসাসেবা শুরু করেন। তিনি চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার মানুষের কাছে হাড় ভাঙার চিকিৎসক হিসেবে বেশ প্রসিদ্ধ ছিলেন। তাঁকে সবাই ‘গরিবের ডাক্তার’ বলে ডাকত।

চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ জাফর আলম পল্লিচিকিৎসক শম্ভু দের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ একজন সত্যিকারের গরিবের ডাক্তারকে হারাল।