৩৭ বিচারক ও আদালতের ১৩৯ কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনের সময় এ পর্যন্ত সারা দেশের অধস্তন আদালতের ৩৭ জন বিচারক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। আদালতের ১৩৯ জন কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ৩৮ এবং অধস্তন আদালতের ১০১ জন কর্মচারী রয়েছেন। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।

মুখপাত্রের তথ্যমতে, আক্রান্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত অধস্তন আদালতের ১০ জন বিচারক সুস্থ হয়েছেন। আর লালমনিরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) ফেরদৌস আহমেদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জুন ঢাকার সিএমএইচে মারা যান।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এই কর্মকর্তা ২৩ জুন জানিয়েছিলেন, ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচারকাজ পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনের সময় এ পর্যন্ত (২৩ জুন) সারা দেশের অধস্তন আদালতের ২৬ জন বিচারক, সুপ্রিম কোর্টের ২৬ জন কর্মচারী এবং অধস্তন আদালতের ৭১ জন কর্মচারী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ছয় দিনের ব্যবধানে অধস্তন আদালতের আরও ১১ জন বিচারক করোনায় আক্রান্ত হলেন। আর সুপ্রিম কোর্টের ১২ জন এবং অধস্তন আদালতের ৩০ জন কর্মচারী করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এ হিসেবে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মাদারীপুর জেলা জজ আদালতের জারিকারক মো. কাউসার ১৮ জুন এবং নওগাঁ জেলা জজ আদালতের অফিস সহায়ক মহিউদ্দিন মোহন ১৯ জুন মারা যান। মাগুরার জেলা জজ মো. কামরুল হাসান (জেলা জজ) বর্তমানে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালের আইসিইউতে এবং ভোলার জেলা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক ঢাকার ইউনিভার্সেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্তের পর বর্তমানে সুস্থ হয়েছেন ১০ জন বিচারক। তাঁরা হলেন, নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ শাহাজাহান কবির, মুন্সিগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমান, কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) কিরণ শংকর হালদার, ঢাকার বিশেষ জজ বিশেষ জজ আদালত-৮ বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) বেগম শামীম আহমেদ, জয়পুরহাটের শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মো. রুস্তম আলী, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (জেলা জজ) এস মোহাম্মদ আলী, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা জজ মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ পারভেজ, ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ তসরুজ্জামান ও ডিপিডিসির স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রেজমিন সুলতানা।

বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুসারে, আক্রান্ত হয়ে নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন আরও ২৪ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ মো. আব্দুর রহিম, চাঁদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল ইসলাম, কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো রেজাউল করিম, ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাসফিকুল ইসলাম, নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা জজ মো. আলমগীর ফারুকী, বরিশালের অতিরিক্ত জেলা জজ মুহাম্মাদ মাহবুব আলম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সার, নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ জামান, কুড়িগ্রাম ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তৈয়ব আলী, খুলনার সিনিয়র সহকারী জজ প্রণব কুমার হুই, নওগাঁর সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম মিয়া, নওগাঁর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম, ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ বেগম সুমাইয়া রহমান, গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসেন, নেত্রকোনার সহকারী জজ মো. মেহেদী হাসান, চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে, চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমান, নোয়াখালীর হাতিয়া চৌকি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নিজামউদ্দিন, খাগড়াছড়ির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান, সিলেটের জকিগঞ্জ চৌকির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন, ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান, খুলনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান, খুলনার সহকারী জজ সারওয়ার আহমেদ এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেন্স অফিসার আশিকুর রহমান।