লঞ্চ দুর্ঘটনা: শরীফের বাড়িতে মাতম

লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ইসলাম শরীফের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছবি: প্রথম আলো
লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ইসলাম শরীফের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছবি: প্রথম আলো

মেয়েটা বাবার খুব আদুরে। সোমবার ইসলাম শরীফ ঢাকায় যাওয়ার সময় ছোট মেয়েটা তাঁর কোল থেকে আসতে চাইছিল না। বারবার বাবার দিকে তাকিয়ে কাঁদছিল। মেয়েটা হয়তো বুঝতে পেরেছিল, এটাই তার বাবার সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ।

১০ মাস বয়সী মেয়ে তৈয়বা শরীফের সঙ্গে তাঁর বাবা ইসলাম শরীফের শেষ স্মৃতিটির কথা বলতে বলতে কাঁদছিলেন তৈয়বার মা জাকিয়া সুলতানা। গতকাল সোমবার বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের একজন এই ইসলাম শরীফ (৩৫)। তাঁর বাড়ি মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার রিকাবিবাজার এলাকায়। তাঁর মৃত্যুর খবরে বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ইসলাম শরীফ মিরকাদিম পৌরসভা এলাকায় হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করতেন। দেশে করোনা মহামারির জন্য তিন মাস ধরে বাড়িতে ছিলেন। ঢাকায় যাতায়াত বন্ধ ছিল তাঁর। তিন মাস পর সোমবারই তিনি মালামাল আনার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার ইসলামের বাবা জাহান শরীফ বলেন, একটাই ছেলে তাঁর। খুব আদরের ছেলে ইসলাম শরীফ। আট বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করান। সংসারে ১০ মাস বয়সী তৈয়বা ইসলাম নামে একটি নাতনিও আছে তাঁদের। সবকিছু মিলিয়ে খুব সুখের সংসার ছিল। লঞ্চ দুর্ঘটনায় সব কিছু শেষ হয়ে গেল। নিহত ইসলামের পরিবারের দাবি, এটা দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড ছিল। ছেলে হত্যার বিচার চায় পরিবারটি।

ইসলাম শরীফের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা বলছিলেন, ‘কয়েক দিন আগে তাঁর পছন্দে আমাকে একটা থ্রি-পিস কিনে দিয়েছিল। সোমবার সকালে বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় বলেছিল, বিকেলে তাঁর জন্য যেন নতুন জামাটি পরি। নতুন জামা পরলে নাকি আমাকে সুন্দর দেখায়।’
আরও পড়ুন:ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার