সাংবাদিকদের করোনাকালীন সহায়তা চেক বিতরণ করলেন তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উপস্থিত সীমিতসংখ্যক সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের মধ্যে করোনাকালীন সহায়তার প্রথম পর্যায় ও ট্রাস্টের নিয়মিত সহায়তা চেক বিতরণ করেন। পিআইবি সেমিনার কক্ষ, কাকরাইল, ঢাকা, ৩০ জুন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
তথ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উপস্থিত সীমিতসংখ্যক সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের মধ্যে করোনাকালীন সহায়তার প্রথম পর্যায় ও ট্রাস্টের নিয়মিত সহায়তা চেক বিতরণ করেন। পিআইবি সেমিনার কক্ষ, কাকরাইল, ঢাকা, ৩০ জুন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত সাংবাদিকদের করোনাকালীন সহায়তা চেক বিতরণ করছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লী‌গের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট-পিআইবির সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান তথ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উপস্থিত সীমিতসংখ্যক সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের মাঝে করোনাকালীন সহায়তার প্রথম পর্যায় ও ট্রাস্টের নিয়মিত সহায়তা চেক বিতরণ করেন।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বর্ণনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা মহামারির শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের আপামর মানুষের জন্য দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এখন পর্যন্ত সাত কোটির বেশি মানুষ সরকারি সহায়তার আওতায় এসেছে। পাশাপাশি করোনার সম্মুখযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ সহায়তার আওতায় সাংবাদিকদের বিষয়েও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন, করোনাকালে চাকরি হারানো ও বেতন না পাওয়া—এই তিন অসুবিধায় নিপতিত সাংবাদিকদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে দেড় হাজার সাংবাদিক এ সহায়তা পাবেন এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। উপযুক্ত যাঁরা প্রথম পর্যায়ে বাদ পড়বেন, ক্রমান্বয়ে তাঁরাও এ সহায়তা পাবেন।’ করোনাকালীন বিশেষ সহায়তা ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের নিয়মিত বরাদ্দ ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে ১৯৯ জন সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

দল-মতনির্বিশেষে সারা দেশের সাংবাদিকদের এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা মনে করি রাষ্ট্র সবার। সুতরাং রাষ্ট্রের সহায়তা সবাইকে পেতে হবে, সে আমাদের দলের সমর্থক না হোক, আমাদের সরকারের কড়া সমালোচক হোক বা সভা-সমিতিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের সমালোচনা করুক। রাষ্ট্রের বাড়ানো সহযোগিতার হাত তার কাছেও পৌঁছাতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

তথ্যমন্ত্রী তাঁর নির্দেশনা অনুসারে দল-মতনির্বিশেষে তালিকা প্রণয়নের জন্য সাংবাদিক ইউনিয়নকে ধন্যবাদ জানান। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এ সময় করোনা ও করোনা উপসর্গে মৃত্যুবরণকারী দৈনিক ‘বাংলাদেশ খবর’-এর চিত্রগ্রাহক এম মিজানুর রহমান, দৈনিক ‘ভোরের কাগজ’-এর স্টাফ রিপোর্টার আসলাম রহমান ও দৈনিক ‘সময়ের আলো’র প্রধান প্রতিবেদক হুমায়ুন কবীর খোকন—তিন সাংবাদিকের পরিবারপ্রতি তিন লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া তিনি করোনাকালীন সহায়তার প্রতীকী চেক বিতরণ করে প্রাথমিক পর্যায়ের সহায়তার সূত্রপাত করেন।

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পিআইবির মহাপ‌রিচালক জাফর ওয়া‌জেদের সভাপতিত্বে বাংলা‌দেশ ফেডা‌রেল সাংবাদিক ইউনিয়ন—‌বিএফইউজের সভাপ‌তি মোল্লা জালাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়‌ন—ডিইউজের সভাপ‌তি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বক্তব্য দেন।

বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, ভারত, পাকিস্তান বা নেপালসহ উপমহাদেশের কোথাও সাংবাদিকদের জন্য এ ধরনের সহায়তার নজির নেই। সরকারের এ উদ্যোগের জন্য সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সহায়তাপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন গোলাম মহিউদ্দিন খান ও প্রয়াত সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা রিনা। ট্রা‌স্টের সদস্যস‌চিব মো. মাহফুজুল হকসহ চেকপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের একাংশ এ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। বিজ্ঞপ্তি