জাকির-সাজেদার শখের খামার

নিজের খামারে জাকির হোসেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
নিজের খামারে জাকির হোসেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

জাকির হোসেন ডাক দিলেই মাথা নেড়ে কাছে এল নাতি আর কালু। দুটিই বড় নাদুসনুদুস। নাতির ওজন হয়েছে ছয় শ কেজি আর কালুর সাড়ে পাঁচ শ। সামনে কোরবানিতে হাটে তোলা হবে এদের। জাকির আশা করছেন, নাতির দাম পাবেন ছয় লাখ টাকা, আর কালুর পাঁচ লাখ। বাকিটা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মধ্য বোয়ালখালী এলাকার জাকির হোসেন ও সাজেদা বেগম দম্পতি গড়ে তুলেছেন শখের গরুর খামার। ২০১৬ সালের অক্টোবরে দুটি দেশি গরু দিয়ে শুরু করেছিলেন। এখন গরুর সংখ্যা ১৫। সব কটি বিদেশি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের। তিনটি গাভি সকাল-বিকেল দুধ দেয়। ৪০ লিটার দুধ পাইকারি বিক্রি করেন ৫০ টাকা দরে। গরুর গোবর থেকে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করে সে গ্যাস দিয়ে চলে রান্নাবান্নার কাজ। আর মজুত গ্যাসে দশটি বাড়িতে সংযোগ দিতে পারবেন। তাতে আয় হবে মাসে আরও ১০ হাজার টাকা।
গত ২৩ জুন বিকেলে উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মধ্য বোয়ালখালী গিয়ে দেখা যায়, ২৫ প্রস্থ ও ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের টিনশেড ঘরে গরুগুলো বাঁধা। জাকির হোসেনের শ্বশুর ও শাশুড়ি গরুকে খড় খাওয়াচ্ছেন। এক কর্মচারী দুধ দোহন করছেন। আরেক কর্মচারী আরেকটি ঘরে বায়োগ্যাস দিয়ে গরুর খাবার তৈরি করছেন।

জাকির হোসেন বললেন, খামার গড়তে তাঁর অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। প্রতিদিন খরচ চার হাজার টাকা। বর্তমানে যে গরু আছে, তার মূল্য ৩০ লাখ টাকার বেশি। তাঁর আশা, এক সময় তিনি লাভের মুখ দেখবেন।

জাকিরের আক্ষেপ, সরকার খামারিদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করলেও সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে অনেক তদবির করেও কোনো ঋণসহায়তা পাননি তিনি। সাজেদারও একই কথা, যদি সরকারি ঋণসুবিধা পাওয়া যেত, তাহলে খামারটিকে বড় করতে পারতাম।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জওহর লাল চাকমা মনে করেন, জাকির হোসেন সরকারি ঋণসুবিধা পাওয়ার যোগ্য। তাঁকে ঋণসুবিধা দেওয়ার জন্য সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংকে সুপারিশ করেছেন বলে জানালেন।