টেকনাফে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুজন রোহিঙ্গা মাদক কারবারি নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুজন রোহিঙ্গা মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিজিবির তিনজন সদস্য আহত হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি।

নিহত দুজন হলেন, উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের জি-ব্লকের ২/ই শেডের বাসিন্দা মোহাম্মদ শফির ছেলে মোহাম্মদ আলম (২৬) ও উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের কে ব্লকের কে/৩ এর বাসিন্দা মোহাম্মদ এরশাদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ ইয়াসিন (২৪)।

বিজিবির দাবি, নিহত যুবক দুজন মাদক ব্যবসায়ী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা। তাঁদের কাছ থেকে ৫০ হাজারটি ইয়াবা বড়ি, একটি চায়না পিস্তল ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ওযাব্রাং নানির বাড়ি বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্যটি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি জানতে পারে, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ওযাব্রাং নানির বাড়ি বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে নাফ নদী সাঁতরে একটি ইয়াবার চালান পাচার করা হবে। সেই সূত্র ধরে হ্নীলা সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবির সদস্যরা চোরাচালান বিরোধী টহল জোরদার ও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেন। কিছুক্ষণ পরে দূর থেকে তিন-চারজন ব্যক্তিকে নাফ নদী পার হয়ে বেড়িবাঁধে উঠতে দেখেন। টহলদল তাঁদের চ্যালেঞ্জ করলে সশস্ত্র ইয়াবা কারবারিরা অতর্কিতে গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির তিন সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে ৪-৫ মিনিটের মতো গোলাগুলি হয়। একপর্যায়ে ইয়াবা কারবারিরা গুলি করতে করতে কেওড়া বাগানের ভেতর দিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। গোলাগুলি থামার পর টহলদল ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে ৫০ হাজারটি ইয়াবা বড়ি, একটি চায়না পিস্তল ও দুটি গুলিসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজন উদ্ধার করে। গুলিবিদ্ধ দুজন ও বিজিবির তিনজন সদস্যকে দ্রুত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক খান এ আলম বলেন, রাতে বিজিবি পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সাধারণ পোশাকে থাকা দুই ব্যক্তির শরীরে তিনটি করে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তবে তাঁদের দুজনের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পোশাক পরা বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিজিবির অধিনায়ক বলেন, গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাতেই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ী, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত চারজন নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৫৩জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই নারীসহ ৯৫জন রোহিঙ্গা রয়েছেন।