প্রতিশোধ নিতে শিশুটিকে হত্যা করেন প্রতিবেশী নারী

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আদাবরে নিহত শিশু সাদিয়ার দাদা বস্তির সামনে প্রতিবেশী পারভীনকে দোকান তুলতে বাধা দিয়েছিলেন। এর প্রতিশোধ নিতেই চার মাস বয়সী শিশু সাদিয়াকে গলা কেটে হত্যা করেন পারভীন আক্তার। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও আজ বুধবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পারভীন এসব তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত ৩ জুলাই দুপুরে ৩৮/১০ উত্তর আদাবর বাজার সংলগ্ন বস্তির নিজের টিনসেড ঘরে শিশু সাদিয়ার গলা কাটা লাশ পান তার মা মুর্শিদা বেগম। শিশুটিকে ঘরে রেখে তার মা ঘরের কাছেই রান্না করছিলেন। রান্না শেষে ঘরে ফিরে দেখেন সাদিয়ার নিথর দেহ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা শাহজাহান বাদী হয়ে আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেন।

আজ দুপুরে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ শেরে বাংলা নগরে তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিশু সদিয়ার হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে গত ৫ জুলাই শিশুটির প্রতিবেশী পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি শিশু সাদিয়াকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে পারভীন। সে বলেছে গত মার্চে লকডাউন চলাকালে তার স্বামীকে বস্তির সামনে দোকান বসাতে দেননি শিশুটির দাদা। শিশুটির দাদা ওই বস্তির ম্যানেজার। এতে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। তা ছাড়া পারভীনের দুই সন্তান সাদিয়াদের ঘরে গেলে তার মা-বাবা শিশুদের গালাগাল ও মারধর করতেন। এ নিয়ে বাগবিতন্ডায় ক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠে পারভীনের মধ্যে। তিনি সাদিয়ার মা বাবাকে উচিত শিক্ষা দিতে সুযোগ খুঁজতে থাকেন। ঘটনার দিন তিনি সাদিয়াদের ঘরে ঢুকে দেখেন সাদিয়া ঘুমাচ্ছে। ঘরের কাছেই তার মা রান্না করছেন। সাদিয়ার বাবা কাজে বাইরে আছেন। এ সুযোগে ঘুমন্ত সাদিয়ার গলায় ব্লেড চালিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তিনি দ্রুত তার ঘরে চলে যান।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, সাদিয়া হত্যায় ব্যবহৃত ব্লেডটি পারভীনের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞসাবাদে পারভীন জানান পাঁচ মাস আগে পারভীন ঢাকায় আসেন। তার স্বামী একজন রিকশাচালক। আর সাদিয়ার বাবা দিনমজুর। ডিসি হারুন বলেন, হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছে। শিগগিরই এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিমান্ডের তৃতীয় দিনে গতকাল পারভীন আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হন। গতকাল আদালত পারভীনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নিয়ে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন।