'গিফট বক্স' প্রতারণায় ১৬ নাইজেরীয় কারাগারে

প্রতীকী ছবি। এএফপি
প্রতীকী ছবি। এএফপি

ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ‘উপহার’ পাঠিয়ে পরে কৌশলে অর্থ আদায় করার অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে ১৬ জন নাইজেরিয়ার নাগরিক। গ্রেপ্তার সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারের সময় এদের কাছ থেকে ৭ লাখ ২২ হাজার টাকা, ২৯ হাজার নাইজেরীয় মুদ্রা, ২৩টি মোবাইল ফোন, ১৫টি পাসপোর্ট ছাড়াও বেশ কিছু পোশাক জব্দ করা হয়েছে।

১৮ জন্য মধ্যে আটক দুই বাংলাদেশি হলেন- মো. ইমরান হোসেন (৩২) এবং হারুন উর রশিদ (৩৫)। আর ১৬ নাইজেরীয় হলেন - সিমিজি ওয়েমা, আজিনা চুকুওয়াকু, সিমুবি এটাস গাবিরিয়েল, কেনুসুবু স্ট্যানলি এমবা, ওয়াকি সেলেসটাইন আবুচি, ওজুজুবু স্যামুয়েল ইকিনি, ওফুচুবু টসিবু ওহিন্নারা,ওবুকা সানডে ইমমানুয়েল,এনডুম্মাডু চিনিডা,ইনুগবালাইক অ্যান্থনি ওকাবিডিরি, চিবুফি ইজুনি ওভিনওয়ানি, উজুচুকুবা ডার্লিংটন চিকিলু, কেনিচুকুবা চালর্স অনবাওচু, ওজোরমাগবো হেনরি ইজিকি, চিবুজুর এনওনেটি ভিক্টর এবং এনোরুকা জিনিকা ফ্রান্সিস। একদিনের রিমান্ড শেষে আজ বৃহস্পতিবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শাহ আলম বলেন, একজন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার পর অভিযোগ করলে তার ভিত্তিতে তদন্ত করে কিছুদিন আগে চক্রের ১৮ সদস্যকে আটক করা হয়। ভুক্তভোগী ব্যক্তি ফেসবুকে অপরিচিত একজনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে আটক সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা মেসেঞ্জার ও ওয়াটস অ্যাপে তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। একপর্যায়ে ‘বিদেশি বন্ধু’ কিছু উপহার পাঠাবে বলে জানায়। এরপর উপহার হিসেবে তাকে একটি আইফোন, আইপ্যাড ও কিছু ডলার পাঠানো হয়। উপহার হাতে পাওয়ার কিছুদিন পর এক ব্যক্তি কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে তাকে ফোন করেন। তাকে বলা হয়, উপহারের ওই বাক্স দেশের নিয়ম অনুযায়ী কাস্টমস ডিউটি না দিয়েই আনা হয়েছে। সে জন্য এখন তাকে ৪৫ হাজার টাকা দিতে হবে।

সিআইডির কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির কথায় ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি ৪৫ হাজার টাকা একটি ব্যাংক হিসেবে (অ্যাকাউন্টে) জমা করে দেন। কিন্তু পরে তাকে আবারও ফোন করে বলা হয়, উপহারের বাক্সে কিছু ডলার রয়েছে; সে জন্য তাকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে; তা না হলে কাস্টমস আইন ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে। দ্বিতীয় দফায় ফোন পেয়ে ওই ব্যক্তির সন্দেহ হয়। এরপর তিনি সিআইডির সাইবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একজন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার পর অভিযোগ করলে তার ভিত্তিতে তদন্ত করে এই চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়।

সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলেন, সিআইডি কিছুদিন আগে প্রথমে এই চক্রে সরাসরি যুক্ত দুজন বাংলাদেশি এবং একজন নাইজেরীয়কে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাকি ১৫ জনকে পল্লবী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ধানন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তারা কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকে গত বুধবার ১৮ জনকে একদিন করে রিমান্ডে আনা হয়। রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।