ড্যান্সবারের জন্য নারী পাচার: 'গডফাদার' আজম খান গ্রেপ্তার

সিআইডির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
সিআইডির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

সহস্রাধিক নারীকে কাজ দেওয়ার নামে যৌনকর্মে বাধ্য করায় আজম খান নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

দুবাইতে চার তারকাযুক্ত তিনটি ও তিন তারকাবিশিষ্ট একটি হোটেলের মালিক এই আজম খান।

আজম খানের মালিকানাধীন হোটেলগুলো হলো ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স ক্লাব, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্র্যান্ড ও হোটেল সিটি টাওয়ার।

সম্প্রতি দুবাই পুলিশ আজম খানের ব্যাপারে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসে জানা‌য়। দেশটি তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। একটি এক্সিট পাস নিয়ে আজম বাংলাদেশে চলে আসেন। তারপর থেকে আত্মগোপনে যান।

সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন বিভাগের উপমহাপরিদর্শক ইমতিয়াজ আহমেদ সিআইডির সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

সিআইডি বলছে, আজম খান একজন গডফাদার। সারা দেশ থেকে দালালের মাধ্যমে নারীদের সংগ্রহ করতেন আজম। তাঁদের হোটেলে কাজ দেওয়ার কথা বলে জোর করে ড্যান্সবার ও যৌনকর্মে বাধ্য করা হতো।

একেকজনকে ৫০ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়ার কথা বলে নারীদের পাচার করা হয়।

এ কাজে আজম খানকে সহযোগিতা করত একাধিক ট্রাভেল এজেন্সি ও বিদেশি কিছু বিমান সংস্থা।

দেশে ছয়টি হত্যা মামলাসহ এই আজম খানের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি। তিনি ছাড়াও এ কাজে দুবাইয়ে তাঁর সঙ্গে আরও দুই ভাই যুক্ত ছিলেন। এই দলে ভারত ও পাকিস্তানের দলগুলোও যুক্ত আছে।

সিআইডি আজম খানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর অপর দুই সহযোগী হলেন আল আমিন হোসেন ওরফে ডায়ামন্ড ও আনোয়ার হোসেন ওরফে ময়না।

দুবাইতে বাংলাদেশ দূতাবাস পাসপোর্ট রেখে আজম খানকে দেশে পাঠায়। দেশে ফিরে কী করে তিনি পালিয়ে গেলেন? এমন প্রশ্নে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একজন আসামিকে পাঠানো হচ্ছে, সে সম্পর্কে পুলিশ অবহিত ছিল না। এই সুযোগে আজম খান নতুন পাসপোর্ট করে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন।

এ ঘটনায় ২ জুলাই সিআইডি বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেছে। পাচারের শিকার নারীরা জবানবন্দিও দিয়েছেন।

তবে কবে কোথা থেকে আজম খানকে ধরা হয়েছে, সে তথ্য সাংবাদিকদের জানায়নি সিআইডি।

অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্সি, বিদেশি এয়ার লাইনস ও গ্রেপ্তারের তথ্য পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।