সুনামগঞ্জে বন্যার পানি ধীরে কমছে

সুনামগঞ্জে পানিবন্দী একটি পরিবার। শহরের উকিলপাড়া এলাকা থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: খলিল রহমান
সুনামগঞ্জে পানিবন্দী একটি পরিবার। শহরের উকিলপাড়া এলাকা থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: খলিল রহমান

সুনামগঞ্জ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত দুই দিন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় এবং উজান থেকে পাহাড়ি ঢল কম নামায় জেলার নদী ও হাওরে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমছে ধীরে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গত শুক্রবার থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলা ও চারটি পৌরসভা দ্বিতীয় দফা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। গত ২৫ জুন প্রথম দফায় বন্যা শুরু হয়। লোকজনের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে যায়। সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কে। সুনামগঞ্জ থেকে লোকজন নৌকায় যাতায়াত করছেন বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলায়।

আজ সকালেও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক ও মানুষের বাড়িঘরে বন্যার পানি ছিল। শহরের পূর্ব নতুনপাড়া, হাজীপাড়া, শান্তিবাগ মুহাম্মদপুর, বড়পাড়া, ওয়েজখালি, মল্লিকপুর, হাসননগর, সুলতানপুর, আপ্তাবনগর, উত্তর আরপিননগর এলাকায় রাস্তাঘাট ও মানুষের বাড়িঘরে বন্যার পানি দেখা গেছে। লম্বা সময় মানুষের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি থাকায় মানুষজন ভোগান্তিতে পড়েছেন।

মুহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা মফিল আলী বলেন, ‘এক দিনে পানি কমেছে মাত্র এক ইঞ্চি। খুব ধীরে পানি নামের। আরও এক সপ্তাহ লাগবে ঘর থেকে পানি নামতে। আমরার তো থাকা, খানি লইয়া বড় ভোগান্তিতে আছি।’

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার ১১টি উপজেলার ৮১টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৩৫২টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ হাজার ২২৯টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, দুই দিন ধরে জেলায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে না। একই সময়ে উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে কম। যদি বৃষ্টি না হয় এবং পাহাড়ি ঢল কম নামে, তাহলে পানি আরও কমবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ জানান, সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নদী ও হাওরে পানি কমছে। মানুষের বাড়িঘর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলায় সরকারের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। একই সঙ্গে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে বলে জানান তিনি।