দৌলতপুরে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় যমুনা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ নদীর পানি ছিল বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনার পানি বেড়েছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক শ পরিবার।

দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা মোস্তারী প্রথম আলোকে জানান, যমুনার পানি বেড়ে চলেছে। এতে উপজেলার বাচামারা, চরকাটারী ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আরিচা কার্যালয়ের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) ফারুক আহমেদ জানান, যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৩ সেন্টিমিটার পানি বাড়ছে। আজ দুপুর ১২টার দিকে এখানে যমুনার নদীর পানি ৯ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

মানিকগঞ্জ পাউবো ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে জেলার দৌলতপুরে যমুনা ও হরিরামপুরে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে দৌলতপুরের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তোফাজ্জাল হোসেন জানান, নদীতে পানি বাড়ায় তাঁর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদী, কাশি দয়ারামপুর, রামনারায়ণপুর, পুরানপাড়াসহ আরও কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ব্রাহ্মণদী গ্রামের বেশ কয়েকটি বসতভিটায় পানি প্রবেশ করেছে। গবাদিপশু নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক মানুষ।

বাচামারা ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ জানান, ইউনিয়নের সুবুদ্ধি পাচুরিয়া, চর ভারাঙ্গা, বাদুটিয়াসহ কয়েকটি এলাকায় অর্ধশতাধিক বসতভিটায় পানি উঠে পড়েছে। এসব পরিবারের মানুষ দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ওরফে রাজা জানান, উপজেলার বাঘুটিয়া, বাচামারা, চরকাটারী, জিয়নপুর ও খলসি—এই পাঁচ ইউনিয়ন নদীভাঙন ও বন্যাকবলিত এলাকা। অব্যাহত পানি বাড়ার কারণে বন্যার শঙ্কায় আছেন হাজারো মানুষ। আর নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব মানুষ।

ইউএনও সাবরিনা মোস্তারী জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থতির খবর আদান–প্রদানের জন্য উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ (কন্ট্রোল রুম) খোলা হয়েছে। প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বন্যা পরিস্থিতি জানাতে বলা হয়েছে।