সাংসদের গাড়ির দুই চালকের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় মোটরসাইকেল থামানো নিয়ে স্থানীয় (নাটোর-১) সাংসদ শহিদুল ইসলামের গাড়ির দুই চালকের সঙ্গে এক পুলিশ কর্মকর্তার ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার উপজেলা সদরের মালঞ্চি রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ওই দুই চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। তবে সাংসদ বলছেন, পুলিশ তাঁর এক গাড়িচালককে অন্যায়ভাবে মারপিট করেছে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে সাংসদ শহিদুল ইসলামের গাড়ির চালক মোমিনুল ইসলাম ও ইয়াকুব আলী একই মোটরসাইকেলে চড়ে মালঞ্চি রেলগেট হয়ে সাংসদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। রেলগেটের ঢালু সড়কে তাঁরা এলোমেলো গতিতে গাড়ি চালাতে থাকলে পেছনে মোটরসাইকেলে থাকা বাগাতিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল ইসলাম তাঁদের থামতে বলেন। তাৎক্ষণিক না থেমে তাঁরা কিছু দুর গিয়ে মোটরসাইকেল থামান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এসআই রাকিবুল চালক মোমিনুলকে ধাক্কা দেন। এ সময় অপর চালক ইয়াকুব প্রতিবাদের সুরে এসআইকে চুপ থাকতে বলেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

একপর্যায়ে সেখানে আরও দুই পুলিশ সদস্য হাজির হয়ে দুই চালককে থানায় নিয়ে যেতে থাকেন। তখন সাংসদের ভাই ও বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওহিদুল ইসলাম তাঁদের ছাড়িয়ে নেন। এ সময় সাংসদের কর্মী–সমর্থকেরা ওই ঘটনার প্রতিবাদে সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে নাটোর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতসহ প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে ঘটনা শোনার পর থানায় চলে যান। ঘটনার পর থেকে সাংসদের চালকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।

মালঞ্চি রেলগেটের ভুসিমালের ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন জানান, তাঁর দোকানের সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। সে সময় তিনি পুলিশ ও সাংসদের গাড়ির চালকদের বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি করতে দেখেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বলেন, ঘটনার সময় এসআই রাকিবুল ইসলাম দায়িত্বে ছিলেন। উচ্ছৃঙ্খলভাবে মোটরসাইকেল চালাতে দেখে তিনি সাংসদের গাড়ির চালকদের থামতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা নির্দেশ মানেননি। উল্টো তাঁরা ওই এসআইকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছেন। তিনি কিছুটা আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সাংসদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার গাড়ির চালকেরা নিরীহ প্রকৃতির ছেলে। ঢালু সড়কের কারণে তাঁরা মোটরসাইকেল থামাতে কিছুটা দেরি করেছিল। এ অপরাধের কারণে তাদের মারপিট করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে যদি দোষ পায়, তাহলে আমি তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেব।’