সিলেটে কুশিয়ারা ও লোভা নদীর পানি বাড়ছে

সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট নগরের অনেক জায়গায় পানি উঠেছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকায়। ছবি: আনিস মাহমুদ
সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট নগরের অনেক জায়গায় পানি উঠেছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকায়। ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটে সুরমাসহ সীমান্ত নদীর পানি কমলেও কুশিয়ারা ও লোভা নদীর পানি বাড়ছে। কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট দিয়ে পানি বাড়ছে, অপরিবর্তিত আছে উৎসমুখের অমলসিদ পয়েন্টের পানি। অপর দিকে গতকাল কমলেও আজ বুধবার সকালে বেড়েছে সীমান্ত থেকে নেমে আসা লোভা নদীর পানি।

বুধবার সকাল ৯টায় ও গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নদ-নদীর পানিপ্রবাহ পরিমাপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিলেটের সুরমা নদীর দুটি পয়েন্ট, কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্ট, সীমান্ত থেকে নেমে আসা সারী ও লোভা নদীর দুটি পয়েন্টসহ মোট আটটি পয়েন্টে প্রতিদিন পাঁচবার পানিপ্রবাহ পরিমাপ করে পাউবো। বন্যা পরিস্থিতিতে পাউবো সিলেট ‘ডেইলি ওয়াটার লেভেল ডেটা’ হিসেবে প্রতিদিন পাঁচ বেলা প্রচার করে। এতে দেখা গেছে, গত ১২ ঘণ্টায় সিলেটের কুশিয়ারা ও সীমান্তের লোভা নদী ছাড়া বাকি সব নদীর পানি কমেছে।

কুশিয়ারার উৎসমুখ সিলেটের জকিগঞ্জের অমলসিদ। ভারতের বরাক উপত্যকা লাগোয়া ওই এলাকায় পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল পর্যন্ত সেখানে পানি ১৫ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৬টা ও ৯টায় সেখানে পানি অপরিবর্তিত। এ ছাড়া, কুশিয়ারার শেওলা ও শেরপুর পয়েন্টে কমছে পানি। শেওলায় ১২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার থেকে ১২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার নেমে এসেছে। শেরপুরে ৮ দশমিক ৪২ থেকে ৮ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার নেমে এসেছে। বাড়ছে শুধু ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ৯ সেন্টিমিটার থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল ৬টা ও ৯টার দুই দফার পরিমাপে অপরিবর্তিত ছিল। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। আর শেওলায় বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ ও শেরপুরে ৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। সকাল ৯টায় দুটো পয়েন্টে যথাক্রমে ১২ দশমিক ৩৭ ও ৮ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

সুরমা নদীর পানি দুটি পয়েন্টের মধ্যে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে সিলেট শহর পয়েন্ট। সেখানে পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেমি। সেখানে সকালে ১০ দশমিক ৭০ সেমিতে নেমে এসেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ছিল ১০ দশমিক ৭৯ সেমি। এ নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় ১৩ দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার থেকে নেমে ১৩ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেখানে পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে লোভাছড়া এলাকা হয়ে লোভা নদীটি কানাইঘাটে সুরমার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। লোভাছড়ার নিকট লোভা নদীর পানি গতকাল সন্ধ্যায় ১৪ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটারে নেমে গিয়েছিল। আজ সকাল ৬টায় সেখানকার পানি ১৪ দশমিক ৫৫ ও সকাল ৯টায় ১৪ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সারী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। আজ সকালে সেখানে পানি ১১ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সারী নদীর বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। গতকাল সন্ধ্যায় ১১ দশমিক ৭০, আজ সকাল ৬টায় ১১ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার ছিল। সীমান্ত থেকে নেমে আসা সারী নদী সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা হয়ে অন্যান্য উপজেলার নদনদীর সঙ্গে মিশেছে।