ঈদে লঞ্চ ও ফেরি চলবে, বাসের সিদ্ধান্ত কাল

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

ঈদুল আজহার পাঁচ দিন আগে থেকে পরের তিন দিন পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার সুপারিশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আজ বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। তবে ওই ৯ দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ছাড়া অন্যান্য সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে। আর সূর্যাস্তের পর সব ধরনের মালবাহী জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলও বন্ধ থাকবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ জানিয়েছে, এ বিষয়ে কাল বৃহস্পতিবার একটি সভা ডাকা হয়েছে। এই সভার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বিভাগের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, কালকের সভায় গণপরিবহন চলার পক্ষেই সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সুপারিশেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

আর রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই তারা অনুসরণ করবে।

জানা গেছে, ১৩ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জননিরাপত্তা বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগকে দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ঈদুল আজহার সময় জনগণের যাতায়াত সীমাবদ্ধ রাখা প্রয়োজন বলে সর্বস্তর থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে। সে কারণে ঈদুল আজহার পাঁচ দিন আগে থেকে পরের তিন দিন পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ রাখার সুপারিশ জানানো হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

এর আগে ১০ জুলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সংক্রমণের বিস্তার রোধে ঈদের ছুটিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম থেকে অন্যান্য স্থানে যাতায়াত বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিল।

অবশ্য গত ৩০ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে বলা হয়েছিল ঈদুল আজহার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন ও জন চলাচল অব্যাহত থাকবে।

এমন প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরি ও অন্যান্য জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ–সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে অবশ্য সভার সভাপতি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওই ৯ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। পরে সেই কথা পরিবর্তন করা হয়।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আপস নয়। প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) জনিত রোগ বিস্তার রোধে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা বা স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে যাত্রীসহ নৌযান চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় জানানো হয়, লঞ্চে যাত্রী ওঠার সময় থেকে লঞ্চের চালক, মাস্টার ও অন্য কর্মচারীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায়ে এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী ওঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ–মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাতের বেলায় স্পিডবোড চলাচল বন্ধ থাকবে। স্পিডবোট চলাচলের সময় যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। কেবিনের যাত্রীদের ছবি, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নৌপরিবহন–সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান খাজা মিয়া, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, নৌপুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, লঞ্চ মালিক সাইদুর রহমান, শহীদুল ইসলাম ভূইয়া, বদিউজ্জামান বাদল ।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ জুলাই বা ১ অগাস্ট কোরবানির ঈদ হওয়ার কথা।