জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

সড়কের ওপর চলছে নৌকা। বুধবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বালুগ্রাম এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
সড়কের ওপর চলছে নৌকা। বুধবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বালুগ্রাম এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

পানি বাড়তে থাকায় জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙে যমুনার পানি আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিপৎসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে নদ–নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চার লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট। সর্বত্র পানি থাকায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে না বন্যার্তরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ৩৪ সেন্টিমিটার বেড়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। দ্বিতীয় দফায় অস্বাভাবিক পানি বাড়ছে। প্রথম দফার পানি বৃদ্ধির রেকর্ড ভেঙেছে। কোথাও এখন বন্যাকবলিত হওয়া আর বাকি নেই। সর্বত্রই এখন বানের পানি।

বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গায় পানি। রাস্তঘাট তলিয়ে গেছে। পানি এখনো ওঠেনি এমন রাস্তায় কিছু মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। খোলা স্থানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদিপশুর খাদ্যের সংকটও দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। অনেকেই জলমগ্ন বাড়ি থেকে নৌকা দেখে ইশারা করছেন কিছু পাওয়ার আশায়। দুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে পানিবাহিত রোগও দেখা দিয়েছে। কাগজে-কলমে ৩৯টি মেডিকেল টিম প্রস্তুতের কথা বলা হয়েছে। দুর্গতদের অভিযোগ, প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় একটি মেডিকেল টিমের সন্ধানও পাননি তাঁরা। বেশির ভাগ এলাকায় এখনো ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর খবর পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফার বন্যায় সাতটি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। একই সঙ্গে চারটি পৌরসভাও বন্যাকবলিত হয়েছে। ওই ইউনিয়ন ও পৌরসভার ২৭৯টি গ্রামের ৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৬৭ জন মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার ৮১০ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফায় তিনজন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, বন্যার্ত মানুষের জন্য ইতিমধ্যে সারা জেলায় ৩১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব দুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে যাবে।