সিলেটে সব নদীর কমলেও বাড়ছে কুশিয়ারার পানি

কুশিয়ারার পানি বেড়ে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে নদী অববাহিকার এলাকা। গতকাল বুধবার কুশিয়ারা তীরের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
কুশিয়ারার পানি বেড়ে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে নদী অববাহিকার এলাকা। গতকাল বুধবার কুশিয়ারা তীরের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের নদ–নদীর মধ্যে শুধু কুশিয়ারার পানি বাড়ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ও দুপুরে কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টের মধ্যে তিনটি পয়েন্টে পানি বেড়েছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ফেঞ্চুগঞ্জ ও অমলসিদ পয়েন্টে। বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ‘ডেইলি ওয়াটার লেভেল ডাটা’ সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছেন পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার। পানি বাড়ায় কুশিয়ারা অববাহিকা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা পাউবোর। তবে কুশিয়ারা ছাড়া সুরমা নদীসহ বাকি সব নদ–নদীর পানি কমছে।

সুরমার পর কুশিয়ারা সিলেট অঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম নদী। এ নদীর উৎসস্থল সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তের অমলসিদ এলাকা। সেখানে ভারতের বরাক নদীর মোহনা থেকে কুশিয়ারা জকিগঞ্জ হয়ে বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ হয়ে মৌলভীবাজারের শেরপুর ও সুনামগঞ্জের রানীগঞ্জ হয়ে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পাউবো এ নদীর অমলসিদ, বিয়ানীবাজারের শেওলা, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে পানিপ্রবাহ পরিমাপ করে।

গতকাল বুধবার শুধু ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ৬টা, ৯টা ও দুপুর ১২টার পরিমাপ অনুযায়ী শেওলা, শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কমছে শেরপুর পয়েন্টের পানি।

পাউবো জানিয়েছে, আজ দুপুর ১২টায় অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি ১৬ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই পয়েন্টে সকাল ছয়টায় ছিল ১৬ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার। গতকাল সন্ধ্যায় ছিল ১৫ দশমিক ৮২ সেন্টিমিটার। অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে আজ দুপুরে ৯ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেখানে সকালে ছিল ৯ দশমিক ৯৫ এবং গতকাল সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার।

বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে সকালে ও দুপুরে দুই দফা পানি বেড়েছে। সেখানে ১৩ দশমিক ০৩ থেকে বেড়ে দুপুরে ১৩ দশমিক ০৫ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ছিল ১২ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার। শেওলায় বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার।

পানি কমছে মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে। সেখানে পানি বিপৎসীমার (৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার) নিচে চলে গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ছিল ৮ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। পানি কমে আজ সকালে ৮ দশমিক ৩৩ ও দুপুরে ৮ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুশিয়ারার পানি বাড়লেও কমছে সুরমাসহ অন্য নদীর পানি। গতকাল সন্ধ্যায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার (১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার) নিচে নেমে আসে। আজ সকালে সেখানে ১৩ দশমিক ২৫ ও দুপুরে ১৩ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্ট (শহর) দিয়ে সকালে ১০ দশমিক ৬০ ও দুপুরে ১০ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। সিলেট শহর পয়েন্টে সুরমা নদীর বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

এ ছাড়া সিলেটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি লোভা ও সারী নদীর পানি কমছে। আজ দুপুরে দুটো নদীর মধ্যে লোভা নদীর পানি কানাইঘাটের লোভাছড়া এলাকায় ১৪ দশমিক ৪১ ও সারী নদীর পানি সারীঘাট এলাকায় ১০ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।