চলে গেলেন বিজ্ঞানী আলী আসগর

অধ্যাপক আলী আসগর। ছবি: কসমিক কালচার
অধ্যাপক আলী আসগর। ছবি: কসমিক কালচার

চলে গেলেন বিজ্ঞানী, গবেষক, জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক ও সংগঠক অধ্যাপক আলী আসগর। বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আলী আসগর দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কজনিত রোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে আরিফ আসগর। তিনি বলেন, আজ ভোরে তাঁর বাবার হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়। ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুকালে আলী আসগরের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।

পরিবার জানিয়েছে, আজ আসরের নামাজের পর রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর কবরস্থান মসজিদে আলী আসগরের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ওই কবরস্থানেই তাঁকে দাফন করা হবে।

আলী আসগর গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফিজিকস ও বায়ামেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। একসময় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

জমাট পদার্থ, চৌম্বক বস্তু, মেডিকেল ফিজিকস ও বায়ো ম্যাগনেটিজম তাঁর নির্বাচিত গবেষণার বিষয়। তাঁর শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় জার্নালে।

গবেষণা-শিক্ষকতার পাশাপাশি বিজ্ঞান গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি, উদ্ভাবনমূলক বিজ্ঞানচর্চার আন্দোলন গড়ে তোলা, বিজ্ঞানকে জনবাধ্য-জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে নানা প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন ও প্রকাশ মাধ্যমের ব্যবহারে তিনি তাঁর মেধা-মননকে প্রয়োগ করেছেন।

গবেষণা-ল্যাবরেটরি ও বিজ্ঞান ক্লাব গড়ে তোলার পাশাপাশি রেডিও, টেলিভিশন, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, ম্যাগাজিন, দৈনিক পত্রিকা—সব মাধ্যমকেই দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানমনস্কতা ও বিজ্ঞানচর্চার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে।

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিক্ষা বিষয়ে তাঁর কয়েক শ প্রবন্ধ ও ২০টির মতো বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের ফেলো এবং বাংলাদেশ জার্নাল অব ফিজিকসের চিফ এডিটর ছিলেন।

সর্বস্তরে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করতে বিজ্ঞানবিষয়ক একাধিক বই লিখেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে সময় প্রসঙ্গে, ভাষা ও বিজ্ঞান, বিজ্ঞান প্রতিদিন, বিজ্ঞানের বিচিত্র জগৎ থেকে, বিজ্ঞানের মজার প্রজেক্ট, বিজ্ঞান ও সমাজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশের পথে, পরিবেশ ও বিজ্ঞান, বিজ্ঞানের দিগন্তে, বিজ্ঞান আন্দোলন উল্লেখযোগ্য।