করোনাভাইরাস আমাদের অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবণে গাছের চারা রোপণ করে মুজিব বর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এক কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবণে গাছের চারা রোপণ করে মুজিব বর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এক কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের কবল থেকে দেশবাসীর মুক্তি লাভের দৃঢ় আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, তাঁর সরকারের নেতৃত্বে দেশ আবারও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস যদিও আমাদের সব অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে। তবে, আমি আশা করি, জনগণ এর থেকে মুক্তি পাবে এবং আবার আমরা এগিয়ে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন চত্বরে তিনটি গাছের চারা রোপণ করে মুজিব বর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এক কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তেঁতুল, ছাতিয়ান ও চালতাগাছের তিনটি চারা রোপণ করেন এবং একই সঙ্গে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২০’-এরও উদ্বোধন করেন।

দেশ, জাতির জন্য কাজ করা ও কল্যাণ করা, যেকোনো প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা এবং সৎ পথে থাকার বিষয়টি তাঁকে জাতির পিতাই শিখিয়ে গেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন। কাজেই, তাঁর আদর্শেই দেশকে গড়তে চাই ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। ইনশা আল্লাহ এই বাংলাদেশ একদিন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে গাছের চারা রোপণ করে মুজিব বর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এক কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২০’-এরও উদ্বোধন করেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে গাছের চারা রোপণ করে মুজিব বর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এক কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২০’-এরও উদ্বোধন করেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই। ছবি: পিআইডি

করোনাভাইরাস সমস্যাটি কেবল বাংলাদেশের একার নয়, সমগ্র বিশ্বেরই সমস্যা,’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এ সময় দেশবাসীসহ সমগ্র বিশ্বের জনগণ যেন এর কবল থেকে মুক্ত হতে পারে, সে জন্য ও মহান আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন।

ওয়ান–ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে দিনটি ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস’ হওয়ায় তিনি দেশবাসীকে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তাঁকে সে সময় কারাগারের নাগপাশ থেকে মুক্ত করে আনার জন্য সমগ্র দেশবাসীসহ বিশ্ব নেতাদের এবং তাঁর সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজস্ব বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করায় দিনটিকে সেই থেকে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন চত্বরে তেঁতুল, ছাতিয়ান ও চালতাগাছের তিনটি চারা রোপণ করেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন চত্বরে তেঁতুল, ছাতিয়ান ও চালতাগাছের তিনটি চারা রোপণ করেন। ঢাকা, ১৬ জুলাই। ছবি: পিআইডি

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন, কারণ, ২০০৭ সালে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, আমার বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, প্রবাসী এবং বিশ্বনেতাদের প্রতি। সেই সঙ্গে আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের সংগঠন, বিশেষ করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সকল সহযোগী সংগঠনের প্রতি, কারণ তারা প্রতিবাদ করেছিল।’ তিনি বলেন, ‘মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সে সময়কার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যালয়ে পাঠিয়েছিল। তাঁদের সই সমর্থন পেয়েছিলাম বলেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপে আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। যদিও আমার বিরুদ্ধে বিএনপির আমলে ১২টি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৫টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।’ তিনি এসব মামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রতিটি মামলার বিষয়ে আমি বলেছি, তদন্ত করে দেখতে হবে, আমি দুর্নীতি করেছি কি না। ঠিক সেটাই করা হয়েছে এবং আল্লাহর রহমতে সবগুলো থেকেই আমি খালাস পেয়েছি।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জনগণের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা কারণ তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থনেই আমি মুক্তি পেয়েছিলাম।’