গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

বন্যায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া-চিনিরপটল সড়ক ডুবে গেছে। শুক্রবার সকালে। ছবি: প্রথম আলো
বন্যায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া-চিনিরপটল সড়ক ডুবে গেছে। শুক্রবার সকালে। ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীতীরবর্তী গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের ১ লাখ ২২ হাজার ৩২০ জন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তারা উচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।

আগের চেয়ে পানি কমলেও শুক্রবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর গত ২৪ ঘণ্টায় করতোয়া নদীর পানি ৮৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

শুক্রবার সকাল ৬টায় করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ৩ হাজার ৮৬ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুর ও মৎস্য প্রকল্পের মাছ। বন্যাকবলিত এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে।

বন্যায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মধ্য উড়িয়া গ্রামের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ছবি: প্রথম আলো
বন্যায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মধ্য উড়িয়া গ্রামের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো বাঁধ ভেঙে যায়নি। যেখানেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে, জরুরিভাবে বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। শুক্রবার থেকে পানি কমা শুরু হবে বলে জানান তিনি।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, শিশুখাদ্য, গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় পানিবন্দী পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। শুকনা খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্যের সংকটে পড়েছে দুর্গত মানুষ। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না।

শুক্রবার সকালে গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ কে এম ইদ্রিশ আলী প্রথম আলোকে বলেন, বন্যাকবলিত জেলার চার উপজেলার জন্য ৩২০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ লাখ টাকা, ৪ লাখ টাকার শিশুখাদ্য, ২ লাখ টাকার গোখাদ্য ও ৩ হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৪ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদের পানিও ৪ সেন্টিমিটার কমেছে।