ময়লার কনটেইনার সরিয়ে দোকান

বর্জ্য ফেলার জন্য ফুটপাতে একটি কনটেইনার রাখা ছিল। কিন্তু এটি সরিয়ে সেখানে দোকান বসানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণ মার্কেটের পশ্চিম পাশের সড়ক থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
বর্জ্য ফেলার জন্য ফুটপাতে একটি কনটেইনার রাখা ছিল। কিন্তু এটি সরিয়ে সেখানে দোকান বসানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণ মার্কেটের পশ্চিম পাশের সড়ক থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

ময়লা ফেলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সড়কের পাশে কনটেইনারটি রাখা ছিল। কিন্তু কনটেইনারটি সরিয়ে সেখানে দোকান বসানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হকের (আবুল) নির্দেশে এটা করা হয়েছে। 

বায়তুল মোকাররম স্বর্ণ মার্কেটের পশ্চিম পাশের সড়কের ফুটপাত অংশে কনটেইনারটি দীর্ঘদিন রাখা ছিল। এই সড়কটি অনেকের কাছে বায়তুল মোকাররম ও জিপিও মধ্য গলি নামেও পরিচিত। কনটেইনারটি রাখার জন্য সেখানে খুঁটিও তৈরি করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেখান থেকে কনটেইনারটি সরিয়ে মালিবাগ মোড়ে সিআইডি কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বায়তুল মোকাররম এলাকার দোকানিরা।

১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘কাউন্সিলরের নির্দেশনায় সেখান থেকে কনটেইনার সরিয়ে দোকান বসানো হয়েছে। এসব আমরা বলতেও পারি না। যেহেতু একই দলের রাজনীতি করি, তাই থুতু ওপরে ফেললে নিজের গায়েই পড়ে।’ এই নেতা বলেন, কাউন্সিলর হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে কথা বলাই মুশকিল হয়ে গেছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফুটপাতের যে অংশে কনটেইনারটি ছিল, সেটি সেখানে নেই। সেখানে মালামাল রেখে দেওয়া হয়েছে। আশপাশের দোকানিরা বলছেন, কাউন্সিলরের লোকজন এটি সরিয়ে সেখানে দোকান ভাড়া দিয়েছেন। এ জন্য আগাম টাকাও নেওয়া হয়েছে।

কনটেইনার কোথায় রাখা হয়েছে জানতে চাইলে দোকানিরা বলেন, মালিবাগ সিআইডি অফিসের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে সিআইডি অফিসের সামনে গিয়ে দেখা গেল, সেখানেই কনটেইনারটি রাখা হয়েছে। কনটেইনারটি যেখানে রাখা হয়েছে তার পাশের চা দোকানি বলেন, গতকাল সকালে দোকানে এসে তিনি কনটেইনারটি দেখেছেন। এর আগে এটি এখানে ছিল না বলেও জানান তিনি।

ময়লার কনটেইনার সরিয়ে দোকান বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর এনামুল হক প্রথম আলোর কাছে এটি সরানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে দোকান বসানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, সেখানে দোকান বসাতে তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি। ওই এলাকায় তাঁদের দলের লোকজন আছে, তারা ওখানে কাকে দোকান দেয়, কী করে, না করে, এসব বিষয়ে তিনি কখনো জিজ্ঞাসা করেন না।

জানতে চাইলে মতিঝিল জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ময়লার ডিপোটি সরানো বিষয়টি তাঁরা শুনেছেন। এরপর সেখানে দোকান বসানোর পরিকল্পনার কথাও তাঁদের কানে এসেছে। তবে ফুটপাতে দোকান কেউ বসাতে পারবে না জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ময়লা ফেলার জায়গায় দোকান বসাতে দেবে না।