চুয়াডাঙ্গায় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৪০০ ছুঁল

চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে একজন চিকিৎসকসহ ৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ৪০০ স্পর্শ করল।

গতকাল রোববার রাতে জেলার সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩১ জন কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছেন সদর উপজেলায়, ২৩ জন। এ ছাড়া দামুড়হুদায় পাঁচজন ও আলমডাঙ্গায় তিনজন রয়েছেন।

সর্বশেষ সদর উপজেলায় যে ২৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১৮ জনই চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় কোভিড রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় এটি করোনার নতুন হটস্পট বা অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হতে চলেছে। জেলার মোট আক্রান্ত ৪০০ জনের মধ্যে ১২৫ জনই (৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসিন্দা।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আমজাদ হোসেন গতকাল রাত পৌনে ১১টায় মিডিয়া সেলের মেসেঞ্জার গ্রুপে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, সর্বশেষ তথ্য যোগ করে জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৫৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪০০ জন কোভিড রোগী পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ছয়জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২৮ জন।

জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, জেলার চারটি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় কোভিড রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ১৬৮। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকাতেই আক্রান্ত ১২৫ জন এবং বাকি ৪৩ জন উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস ওয়ারাসহ মারা গেছেন দুজন। উপজেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭৭ জন।

আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে দামুড়হুদা উপজেলা। এই উপজেলায় এ পর্যন্ত ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন এবং ৬৬ জন সুস্থ হয়েছেন। এ ছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ জন ও সুস্থ হয়েছেন ৫৮ জন। জীবননগর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০। এর মধ্যে ২৭ জন সুস্থ হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, মানুষকে বহু চেষ্টা করেও সেভাবে ঘরে রাখা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধিও পুরোপুরি মানছেন না। ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখলে মুখে মাস্ক পরলেও অন্য সময় তা করছেন না। জোর করে আইন মানাতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাজার হাজার টাকা জরিমানা করলেও সতর্ক হচ্ছেন না।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। গত শনিবার প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৪ সদস্যের করোনা প্রতিরোধ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যরা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি চিহ্নিত এবং আক্রান্ত ব্যক্তি যাতে বাইরে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে না যান, সেদিকে নজরদারি করছেন। আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার করাসহ চাহিদা অনুযায়ী সহযোগিতা করা হচ্ছে।