টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ইউপি সদস্যসহ দুজন নিহত

বন্দুকযুদ্ধ। প্রতীকী ছবি
বন্দুকযুদ্ধ। প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন ইউপি সদস্যসহ দুজন নিহত হয়েছেন।

নিহত দুজন হলেন জেলার উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং এলাকার বাসিন্দা ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বখতিয়ার আহমেদ ওরফে বখতিয়ার মেম্বার (৫৫) ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের ই ব্লকের বাসিন্দা ইউসুফ আলীর ছেলে মোহাম্মদ তাহের (২৭)।

পুলিশের ভাষ্যমতে, নিহত দুজন তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ লাখ টাকা, ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি, দেশীয় পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র (এলজি), ১৭টি তাজা গুলি ও ১৩টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের চারজন সদস্য সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হাবিব ও আবু হানিফ আহত হন।


গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাং সৌদিপ্রবাসী নুর হোসেনের গাছের বাগানে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ঘটে। এ তথ্যটি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ।

ওসি বলেন, গতকাল রাত নয়টার দিকে তাঁর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় অভিযান চালায়। এই সময় মাদক বিক্রয়ের ১০ লাখ টাকাসহ মাদক মামলার পলাতক আসামি বখতিয়ার আহমেদ ও তাহেরকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাঁদের নিয়ে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাং সৌদিপ্রবাসী নুর হোসেনের আকাশি গাছের বাগানে মজুত রাখা ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে পুলিশের চারজন সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় দু’দলের গোলাগুলির মাঝখানে পড়ে বখতিয়ার মেম্বার ও তাহের গুলিবিদ্ধ হন। মোহাম্মদ ইউনুস নামে আরও একজনকে সুস্থ অবস্থায় আটক করতে পুলিশ সক্ষম হয়।

পরে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি, দেশীয় পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র (এলজি), ১৭টি তাজা গুলি, ১৩টি গুলির খোসাসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ নাসিম প্রথম আলোকে বলেন, রাতে পুলিশ ছয়জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সাধারণ পোশাকে থাকা গুলিবিদ্ধ দুজনের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাঁদের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পুলিশের চার সদস্যকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ভোররাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুলিবিদ্ধ দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৬৫ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুই নারীসহ ১০২ জন রোহিঙ্গা।