টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুই রোহিঙ্গা মাদক ব্যবসায়ী নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুজন রোহিঙ্গা মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিজিবির তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।

নিহত দুজন হলেন উখিয়ার কালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা মৃত সৈয়দ আহমদের ছেলে মো. আব্দুস সালাম (৩৫) ও একই শিবিরের মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ছেলে মোহাম্মদ ফেরদৌস (৩০)।

বিজিবি দাবি, নিহত দুজন মাদক ব্যবসায়ী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ২ লাখ ১০ হাজারটি ইয়াবা বড়ি, ১টি দেশীয় অস্ত্র ও ১টি তাজা কার্তুজ এবং ১টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার মোছনির লবণমাঠ–সংলগ্ন ছুরিরখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।

অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান জানান, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান পাচার হওয়ার গোপন সংবাদ পায় বিজিবি। তারই সূত্র ধরে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা সীমান্তচৌকির একটি বিশেষ টহল দল মোছনি লবণমাঠ-সংলগ্ন এলাকায় চোরাচালানবিরোধী টহল দিচ্ছিল। এই সময় দূর থেকে দু–তিনজনকে সাঁতরে নাফ নদী পার হয়ে বেড়িবাঁধে উঠতে দেখা যায়। টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে সশস্ত্র ইয়াবা কারবারিরা গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির তিনজন সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে চার থেকে পাঁচ মিনিটের মতো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ইয়াবা কারবারিরা গুলি করতে করতে পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।

গোলাগুলি থামার পর টহলদল ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে ২ লাখ ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি, ১টি দেশীয় অস্ত্র, ১টি তাজা গুলি, ১টি ধারালো কিরিচসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে। গুলিবিদ্ধ দুজন ও বিজিবির তিনজন সদস্যকে দ্রুত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার দুজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ নাসিম ইকবাল বলেন, রাতে বিজিবি পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সাধারণ পোশাকে থাকা দুজনের শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁদের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পোশাক পরা বিজিবি সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, গুলিবিদ্ধ দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেছেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত চারজন নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৬৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই নারীসহ ১০৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিকও রয়েছেন।