গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

যমুনার পানি বাড়ায় গাইবান্ধা-ফুলছড়ি সড়কের ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নীলকুঠি এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার অংশ ডুবে গেছে। শনিবার সকালে। ছবি: প্রথম আলো
যমুনার পানি বাড়ায় গাইবান্ধা-ফুলছড়ি সড়কের ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নীলকুঠি এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার অংশ ডুবে গেছে। শনিবার সকালে। ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়ার তীরবর্তী গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দী। পানি কমেছে সামান্য। এদিকে গাইবান্ধা-ফুলছড়ি সড়কের ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নীলকুঠি এলাকায় সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার অংশ ডুবে গেছে। এর ফলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৬ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদের পানি ১৫ সেন্টিমিটার কমেছে। পানি কমলেও আজ শনিবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৬টায় করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ৩ হাজার ৮৬ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পুকুর ও মৎস্য প্রকল্পের মাছ ভেসে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি বাড়ায় জেলা শহরের ডেভিড কোম্পানিপাড়া এলাকায় শহররক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের মধ্যউড়িয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কলার ভেলায় চড়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছেন ওই গ্রামের মাজেদ মিয়া। শনিবার সকালে। ছবি: প্রথম আলো
ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের মধ্যউড়িয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কলার ভেলায় চড়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছেন ওই গ্রামের মাজেদ মিয়া। শনিবার সকালে। ছবি: প্রথম আলো

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো বাঁধ ভেঙে যায়নি। যেখানেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে জরুরিভাবে বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। শুক্রবার থেকে পানি কমা শুরু হয়েছে।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, শিশুখাদ্য, গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষ। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

আজ সকালে গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ কে এম ইদ্রিশ আলী প্রথম আলোকে বলেন, জেলার চার উপজেলার জন্য ৩২০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ লাখ টাকা, ৪ লাখ টাকার শিশুখাদ্য, ২ লাখ টাকার গো-খাদ্য ও তিন হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।