সদরঘাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা

ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসী। অনেকে যাচ্ছেন নৌপথে। গতকাল সদরঘাটে।  প্রথম আলো
ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসী। অনেকে যাচ্ছেন নৌপথে। গতকাল সদরঘাটে। প্রথম আলো

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার অন্য ঈদের সময়ের তুলনায় সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড় ছিল কম। এদিকে সদরঘাটের বেশির ভাগ লঞ্চেই যাত্রীদের হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা দেখা যায়নি। মাস্ক পরতে দেখা যায়নি অনেক যাত্রীকে। বেশির ভাগ লঞ্চের ডেকে গাদাগাদি করে বসে থাকতে দেখা যায়।

ঢাকা নদী বন্দরের নৌযান পরিদর্শক কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুট থেকে লঞ্চ এসেছে ৫৯টি ও ছেড়ে গেছে ৩৮টি।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, করোনার সংক্রমণরোধে সদরঘাট টার্মিনালের প্রবেশপথে ছয়টি জীবাণুনাশক টানেল থাকলেও সচল আছে কেবল একটি। তিন–চারটি লঞ্চে যাত্রীদের হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা দেখা গেলেও অনেক লঞ্চেই তা দেখা যায়নি। ভোলা, হুলারহাট, হাতিয়া, পটুয়াখালী, বেতাগী, দেওয়ানবাড়ি ও চরফ্যাশনগামী লঞ্চের ডেকে যাত্রীরা গাদাগাদি করে বসে আছে।

যাত্রীদের ডেকে গাদাগাদি করে বসে থাকার দৃশ্য দেখা যায় দেওয়াবাড়িগামী একটি লঞ্চেও। কেন এভাবে গাদাগাদি করে বসেছেন, জানতে চাইলে মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে আসা টাইলসমিস্ত্রি জামাল হোসেন বলেন, লঞ্চ ছাড়বে সাড়ে তিনটায়। কিন্তু লঞ্চ ছাড়ার চার ঘণ্টা আগে এসেও ডেকে জায়গা পাননি। বাধ্য হয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে ডেকের একপাশে অবস্থান নিয়েছেন।

দেওয়ানবাড়িগামী কর্ণফুলী লঞ্চের কেরানী বাবুল মিয়া বলেন, যাত্রীদের বললেও তারা শুনে না। তারা ইচ্ছা করেই ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে যাত্রীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও বেশির ভাগ লঞ্চেই তা দেখা যায়নি। খিলগাঁও থেকে আসা হুলারহাটগামী মর্নিং সান–৫ লঞ্চের যাত্রী সেতারা বেগম বলেন, ‘শুনেছি করোনার এই সময়ে সদরঘাট টার্মিনাল এলাকা ও লঞ্চে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হবে। কিন্তু টার্মিনালে এসে দেখি, জীবাণুনাশক টানেল বন্ধ। লঞ্চে উঠার সময় হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা নেই। যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লঞ্চমালিক ও সরকারের সুদৃষ্টি দেওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার ঢাকা নদী বন্দরের আহ্বায়ক মামুন আল রশিদ বলেন, লঞ্চ মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিটি লঞ্চে হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আজ (মঙ্গলবার) যাত্রী কম। কাল বৃহস্পতিবার যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে।

বিআইডব্লিউটিএরনৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, লঞ্চের যাত্রীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার বিষয়ে লঞ্চমালিকদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লঞ্চে হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। তিনি আরও বলেন, টার্মিনালের প্রবেশপথে জীবাণুনাশক টানেলগুলো সচল করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।