সন্তান দেখে যেতে পারলেন না ইবু

ইবু খান
ইবু খান

নিখোঁজের দুই দিন পর ইবু খান নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার সীমান্তবর্তী শরীয়তপুরের নাওডোবা এলাকার একটি ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার হয়।

নিহত ইবু (২৪) মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের আনোয়ার খানের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইবু খান ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। গত মঙ্গলবার রাত নয়টার পরে মাদারীপুরের মস্তফাপুর এলাকা হতে দুজন যাত্রী নিয়ে ছিলারচরের উদ্দেশে বের হন। রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় তাঁর মুঠোফোনে কল করে ফোন বন্ধ পান পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি পুলিশকে জানালে ইবুর মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে ছিলারচর এলাকায় তাঁর সর্বশেষ উপস্থিতি দেখতে পায় পুলিশ। বুধবার পরিবারের লোকজন ছিলারচর এলাকায় ইবুর খোঁজ নিতে গেলে তাঁরা জানতে পারেন, হৃদয় মৃধা (২৫) নামের এক তরুণ ইবুর মোটরসাইকেলটি নিয়ে ঘুরছেন। কিন্তু সারা দিন খোঁজাখুঁজি করেও হৃদয়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপর ইবুর সন্ধান চেয়ে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁর বাবা। হৃদয়কে কোথাও খুঁজে না পেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের বুধবার রাতেই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর আজ সকালে শিবচরের সীমান্তবর্তী শরীয়তপুরের নাওডোবা এলাকার একটি ডোবায় ইবুর লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত ইবুর চাচা তোতা খান বলেন, ইবু দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। দুই দিন পর তাঁর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা। সন্তানকে দেখার আগেই ইবুকে মরতে হলো। তিনি বলেন, ইবু তাঁর স্ত্রীর অস্ত্রোপচারের খরচ জোগাতে কয়েক দিন ধরেই নিজের মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী নিতেন। এখন সবকিছুই শেষ হয়ে গেল।

ইবুর আত্মীয় হালান বেপারী বলেন, মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করে ইবুকে হত্যা করা হলো। তাঁদের ধারণা, মোটরসাইকেলের শেষ যাত্রী হৃদয়ই ইবুকে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ইবুর মোটরসাইকেলের শেষ যাত্রী হৃদয়কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তাঁর পরিবারের তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার রাতে থানায় আনা হয়। তাঁরা পুলিশের হেফাজতে আছেন।

ওসি বলেন, লাশটি শরীয়তপুরের জাজিরা থানার নাওডোবায় উদ্ধার হয়। তাই এ ঘটনায় জাজিরা থানায় মামলা হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলায় হৃদয় ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আসামি করা হলে আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।