ঈদের দিনে মাদারীপুর শহর রক্ষা বাঁধে ধস

শহর রক্ষা বাঁধের ২০ মিটার আড়িয়াল খাঁ নদে বিলীন হয়েছে। শনিবার বিকেলে মাদারীপুরে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
শহর রক্ষা বাঁধের ২০ মিটার আড়িয়াল খাঁ নদে বিলীন হয়েছে। শনিবার বিকেলে মাদারীপুরে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে শহর রক্ষা বাঁধের ২০ মিটার আড়িয়াল খাঁ নদে বিলীন হয়ে গেছে। আজ শনিবার বিকেলে শহরের লঞ্চঘাট এলাকার বেড়িবাঁধসহ ওয়াকওয়ের একটি অংশ বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের ক্ষতির মুখে রয়েছে লঞ্চঘাট, পুলিশ ফাঁড়ি, পুরান শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শত শত স্থাপনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয়রা জানায়, আজ দুপুরে হঠাৎ করে আড়িয়াল খাঁ নদের লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। পানির স্রোতে নদের পাশে ওয়াকওয়েসহ শহর রক্ষা বাঁধের ২০ মিটার ধসে যায়। এ সময় পাশের একটি বসতঘরও নদে বিলীন হয়ে যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। ঝুঁকিতে থাকা মানুষেরা বসতঘর থেকে প্রয়োজনীয় মালামাল সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে লঞ্চঘাট, পুলিশ ফাঁড়ি, পুরান শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শত শত স্থাপনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান খান, পৌর মেয়র খালিদ হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সন্ধ্যা ৬টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধসহ ওয়াকওয়ের একটি অংশ বিলীন হয়ে যাওয়ায় ভাঙন রোধে আশপাশে থাকা মানুষজন আতঙ্কে মালামাল সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। আড়িয়াল খাঁ নদে ভাঙন দেখেতে আশপাশের মানুষ এসে জড়ো হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, হঠাৎ করেই বেড়িবাঁধ ধসে পড়ে। সবার মাঝে মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে যার মতো ঘরের ভেতর থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়া শুরু করে। ভাঙন রোধে স্থানীভাবে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান বাসিন্দারা।

লঞ্চঘাট এলাকার জাহান বর্ষা বলেন, ‘যেভাবে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে দুই-চার দিনের মধ্যে আমাদের বাড়িও নদের ভাঙনের বিলীন হয়ে যাবে।’

মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, ‘দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। পাউবোর উচিত অল্প সময়ের মধ্যে ডাম্পিং কার্যক্রম চালু করা। তা না হলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আড়িয়াল খাঁ নদে বিলীন হয়ে যেতে পারে।’

মাদারীপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ‘আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে বন্যা ও নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা শহর রক্ষায় ইতিমধ্যে বালুবোঝাই বস্তা ফেলা শুরু করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন জানান, পানির স্রোত বেশি হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধে ধস হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পাউবোকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে। তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে।