দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ, এক ঘণ্টা লোডশেডিং - এভাবে চলছে ৮ দিন

বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ

দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ, এক ঘণ্টা লোডশেডিং—লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুতের এমন পরিস্থিত চলছে আট দিন ধরে। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে এ অবস্থায় অস্থির জনজীবন। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষও পড়েছে বেকায়দায়। তারা জনবিক্ষোভ ঠেকাতে তিন দিন ধরে এলাকায় মাইকিং করাচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, নোয়াখালীর চৌমুহনী গ্রিড থেকে লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। গত ২৯ জুলাই হঠাৎ গ্রিডের পাওয়ার ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। এটি মেরামত করতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

লক্ষ্মীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৪ লাখ ৮ হাজার গ্রাহক আছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় ৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। কিন্তু গ্রিড থেকে পাওয়া গেছে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট। এ পরিস্থিতিতে এলাকাভিত্তিক দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে।


রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন, রামগঞ্জ উপজেলার চণ্ডীপুর ইউপির চেয়ারম্যান কামাল হোসেনসহ পাঁচজন জনপ্রতিনিধি জানান, ঈদে শহর থেকে গ্রামে এসেছে অসংখ্য মানুষ। এতে গ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে অনেক। অন্যদিকে কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা। বিদ্যুতের এ অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বিঘ্নিত হচ্ছে।

কমলনগর উপজেলার হাজীরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মো. আরিফুর রহমান জানান, অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য তাঁদের জেনারেটরের ওপরে নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ওয়ার্কশপ, ফ্যাক্টরির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাংক, বিমা ও অফিসপাড়ার স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে।

রায়পুর পৌরসভা পানি সরবরাহ শাখা সূত্রে জানা গেছে, অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে পৌরসভার উচ্চ জলাধার ট্যাংকিতে পানি ওঠানো ব্যাহত হয়। এ কারণে গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। একই অবস্থায় আছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পানি শাখাও।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত। কিন্তু আট দিন আগে হঠাৎ চৌমুহনী গ্রিডের পাওয়ার ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায়। প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার স্থাপন করার কাজ শুরু হয়েছে। এটি স্থাপন করতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এখন চাহিদা অনুযায়ী চৌমুহনী গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করায় এই লোডশেডিং হচ্ছে।