ফেঞ্চুগঞ্জ ছাড়া সুরমা-কুশিয়ারার সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে

সিলেটের কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট। ছবিটি সম্প্রতি রেলসেতু এলাকা থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
সিলেটের কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট। ছবিটি সম্প্রতি রেলসেতু এলাকা থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

সিলেট অঞ্চলের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার ছয়টি পয়েন্টের মধ্যে শুধু ফেঞ্চুগঞ্জে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুটি নদীর বাকি পাঁচটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ও দুপুরে দুই দফা পানির পরিমাপ সূত্রে এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

পাউবো জানায়, সিলেট অঞ্চলে সুরমার পর দীর্ঘতম নদী কুশিয়ারা। ভারতের বরাক মোহনা থেকে সিলেটের জকিগঞ্জের অমলসিদ হয়ে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের একাংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নদীটি। এর মধ্যে সিলেট জেলায় এই নদী ছয়টি উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত। কুশিয়ারার অমলসিদ, বিয়ানীবাজারের শেওলা, মৌলভীবাজারের শেরপুর, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি পরিমাপ করে পাউবো। এই চারটি পয়েন্টের মধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জ ছাড়া বাকি সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ও দুপুরে পাউবোর দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্যে দেখা গেছে, কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৬৮ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। আজ সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ৬৩ মিটার থেকে নেমে দুপুর ১২টায় ৯ দশমিক ৬০ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।


পাউবো জানায়, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ মিটার। সেখানে পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে গত ২ জুলাই। ১ জুলাই সন্ধ্যাবেলা ৯ দশমিক ৪৩ মিটার থেকে বেড়ে ২ জুলাই ভোর ৬টায় ৯ দশমিক ৪৭ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয় পানি। এর পর থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল পানি। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৩ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ সময় ফেঞ্চুগঞ্জের নদী অববাহিকা এলাকা ছাড়াও হাকালুকি হাওর তীরবর্তী এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। প্রায় দুই সপ্তাহ পর পানি কমলে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি ৯ দশমিক ৮৫ মিটারে গিয়ে অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে। ২ আগস্ট থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ ছাড়া কুশিয়ারার উৎসমুখ জকিগঞ্জের অমলসিদে ১৪ দশমিক ২৩ মিটার থেকে নেমে আজ দুপুর ১২টায় ১৩ দশমিক ৭৬ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি। একইভাবে শেওলা ও শেরপুর পয়েন্টেও পানি কমছে। শেওলায় দুপুরে পানির স্তর ছিল ১১ দশমিক ৭০ মিটার ও শেরপুরে ৮ দশমিক ১২ মিটার। শেরপুরে পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৫৫ ও শেওলায় ১৩ দশমিক ০৫ মিটার।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী লোভাছড়ার নিকট লোভা নদীর সংযোগস্থল কানাইঘাট পয়েন্ট ও সিলেট শহর পয়েন্টে পানির স্তর পরিমাপ করা হয়। সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি লোভার পানি বাড়লে কানাইঘাট পয়েন্ট হয়ে সুরমা নদীতে পানি বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে সিলেট শহর পয়েন্টেও পানি বাড়ে। সিলেট জেলায় সুরমার দুটো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য অনুযায়ী, সুরমার সিলেট শহর পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৩৮ মিটার থেকে নেমে আজ দুপুরে ৯ দশমিক ১৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কানাইঘাট পয়েন্টে ১১ দশমিক ৮০ থেকে ১১ দশমিক ৫৯ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। সিলেট শহর পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ মিটার ও কানাইঘাটে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার।