নেত্রকোনায় ডিসিকে বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। শনিবার দুপুরে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে ‘জেলার মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’ শীর্ষক ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তান ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল আমিন সভাপতিত্ব করেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংস্কৃতিকর্মী গাজী মোবারক হোসেন এ কর্মসূচি পরিচালনা করেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও প্রাবন্ধিক হায়দার জাহান চৌধুরী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবদুল মতিন, সাবেক সহকারী কমান্ডার আক্কাস আলী আহম্মদ, উপজেলা সংসদের সাবেক কমান্ডার আইয়ুব আলী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সাজ্জাদুর রহমান খান পাঠান, বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাঈনুল হক, আটপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের জেলা শাখার সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামাল প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। নেত্রকোনায় যোগ দেওয়ার পর থেকে সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং চলমান করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেন। তাঁর আকস্মিক বদলিতে জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

সাবেক কমান্ডার নুরুল আমিন বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে বদলি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনভিপ্রেত এই বদলির প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আর অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হলে ওই অভিযোগকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

এদিকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার রায়সহ নেত্রকোনার ১০টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরাও মঈনউল ইসলামের বদলি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শনিবার দুপুরে স্মারকলিপি দেন। একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার নেত্রকোনার নাগরিক সমাজের ব্যানারে জেলা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৩ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। কী কারণে হঠাৎ তাঁকে বদলি করা হয়েছে,Ñতা ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়নি। তবে বেশ আগে তাঁর কার্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তা মঈনউল ইসলামের বিরুদ্ধে সম্মানহানির অভিযোগ আনেন। অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান বলেন, মঈনউল ইসলামের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়, তা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নিরঞ্জন দেবনাথের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে। তদন্তকাজ প্রায় শেষের দিকে। মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।