লতিফুর রহমানের চেহলাম অনুষ্ঠিত

লতিফুর রহমান
লতিফুর রহমান

ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক লতিফুর রহমানের চেহলাম গতকাল রোববার তাঁর গুলশানের বাসায় অনুষ্ঠিত 

হয়েছে। পরিবারের সদস্য, স্বজন, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং গুণগ্রাহীরা এতে অংশ নেন। সমবেত ব্যক্তিরা মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত
কামনা করেন।

সীমিত পরিসরে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অল্প মানুষের উপস্থিতিতে চেহলাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ১৯৯৮ সালে হত্যার শিকার লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন রহমান এবং ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত তাঁর নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

চেহলামে অন্যান্যের মধ্যে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনাজ রহমান, সিইও সিমিন রহমান, পরিচালক আরশাদ ওয়ালিউর রহমান ও শাজরেহ হক, লতিফুর রহমানের ভাই সাইফুর রহমান, জ্ঞাতি ভাই শামসুর রহমান এবং ট্রান্সকম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি রোকিয়া আফজাল রহমান, ব্যবসায়ী নেতা এম কাসেম প্রমুখ।

গত ১ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া গ্রামের ফারাজ মঞ্জিলে লতিফুর রহমান মারা যান। গতকাল রোববার তাঁর মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্ণ হয়। প্রথম আলোর কুমিল্লা অফিসেও লতিফুর রহমানের চেহলাম উপলক্ষে গতকাল মিলাদ মাহফিল ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

লতিফুর রহমান ব্যবসাজগতে একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ব্যবসায় সততা চর্চার জন্য তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত ছিলেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি বেশ কিছু পদক পান।

লতিফুর রহমান প্রথম আলোর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ডেইলি স্টার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। দুটি পত্রিকাই ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে দেশের সেরা গণমাধ্যম।

লতিফুর রহমান আইসিসি-প্যারিসের নির্বাহী পরিষদের সদস্য, আইসিসি-বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ব্র্যাকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ বেটার বিজনেস ফোরামের সদস্য এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাসম্পর্কিত পরামর্শক কমিটিতে ছিলেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ি ফেডারেশনের সাতবারের সভাপতি ছিলেন। লতিফুর রহমান বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য সংস্কার কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।

২০১২ সালে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে লতিফুর রহমানকে বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। ২০০১ সালে বাংলাদেশের আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের বিজনেস এক্সিকিউটিভ পুরস্কার পান তিনি। তিনি সার্ক আউটস্ট্যান্ডিং লিডার অ্যাওয়ার্ড এবং ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডও গ্রহণ করেন।

লতিফুর রহমান ১৯৬৬ সালে চাঁদপুরে তাঁর পারিবারিক পাটকলের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি একজন নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সেখানে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে রহমান পরিবারের মূল উপার্জনকারী প্রতিষ্ঠান ডব্লিউ রহমান জুট মিল জাতীয়করণ হয়। পরের বছর লতিফুর রহমান ট্রান্সকম গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন।