স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর স্বামীর বিষপান

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে রুবিনা আক্তার (২৬) নামের এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে স্বামী খোরশেদ আলম (৩২) বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় খোরশেদ আলমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার খড়মা খানপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রুবিনা আক্তার উপজেলার খড়মা খানপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর মেয়ে। তাঁর স্বামী খোরশেদ আলম একই উপজেলার দক্ষিণ গামারিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে। এই দম্পতির একটি চার মাস বয়সের মেয়ে সন্তান আছে। খোরশেদ আলম ভ্যানচালক। তিনি ঢাকায় ভ্যান চালান।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, এই দম্পতির চার বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁদের ভালোই সংসার চলছিল। কয়েক বছর আগে তাঁদের প্রথম ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সন্তানটি মারা যায়। এরপর চার মাস আগে তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়। এ নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। ঈদের কয়েক দিন পর রুবিনা তাঁর বাবার বাড়ি খড়মা খানপাড়া গ্রামে বেড়াতে যান। গতকাল রোববার রাতে খোরশেদ শ্বশুরবাড়িতে যান। পারিবারিক কলহের জের ধরে খোরশেদ স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুবিনা আজ ভোরে মারা যান।

ছুরিকাঘাত করার পরপরই খোরশেদ আলম বিষপান করেন। এতে তিনিও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি এখনো সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন।

নিহত রুবিনা আক্তারের বড় ভাই মো. জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে আমার বোনটি খাচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ খোরশেদ এসে খাওয়ার মধ্যেই আমার বোনটিকে ছুরি মারেন। অনেক চেষ্টা করেও বোনটাকে বাঁচাতে পারলাম না। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএম মায়নুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে খোরশেদ স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করেন বলে পরিবার জানিয়েছে। পরে তিনি বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে তাই এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।