সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সব নদীর পানি আবার বাড়ছে

সিলেটের প্রধান নদী সুরমা-কুশিয়ারাসহ সব নদ-নদীর পানিতে ভাটার টান পড়েছিল। একটানা প্রায় ৩৭ দিন বিপৎসীমার ওপর থাকা কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও পানি কমছিল। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে ২৪ ঘণ্টায়। সুরমা-কুশিয়ারাসহ সীমান্ত নদ-নদীর পানি আবার বাড়ছে। এর মধ্যে সুরমা ও কুশিয়ারার উৎসমুখে পানি বাড়ছে দ্রুত।

আজ মঙ্গলবার দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে এ বিষয় নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

পাউবো জানায়, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা দিয়ে প্রবহমান সুরমা নদীর দুটো পয়েন্টে পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়। এর মধ্যে উৎসমুখ হিসেবে পরিচিতি কানাইঘাট পয়েন্টে পানি কমে গত রোববার থেকে বাড়ছিল। তবে এ সময় সুরমার অপর পয়েন্ট সিলেট শহর এলাকায় পানি কমছিল। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুটো পয়েন্ট দিয়ে পানি বাড়তে থাকে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৬৫ থেকে বেড়ে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ১০ দশমিক ৮১ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময় সিলেট শহর পয়েন্টে পানি ৮ দশমিক ৬৮ মিটার থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৭১ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সিলেটের ৬টি উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের একাংশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে পানি কমছিল। এর মধ্যে একটানা প্রায় ৩৭ দিন পর পানি বিপৎসীমার নিচে নামে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। গতকাল সোমবার কুশিয়ারার উৎসমুখ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জের অমলসিদে পানি বাড়তে থাকে। আজ মঙ্গলবার কুশিয়ারার অন্য তিনটি পয়েন্টেও পানি বাড়তে দেখা গেছে।

অমলসিদ পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় ১৩ দশমিক ১৮ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকালে সেখানে ১৩ দশমিক ৩৯ মিটার থেকে বেড়ে দুপুরে ১৩ দশমিক ৫০ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়ছে বিয়ানীবাজারের শেওলা ও মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে। তবে কুশিয়ারার মধ্যবর্তী অংশ ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি গত ২৪ ঘণ্টায় স্থির ছিল। গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত সেখানে ৯ দশমিক ২৬ মিটারে পানি স্থির ছিল।

সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়াও পানি বাড়ছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে নেমে আসা লোভা, সারী ও ধলাই নদ-নদীতে। লোভা নদী লোভছড়া এলাকা প্রবাহিত হয়ে কানাইঘাটে সুরমা নদীতে বিলীন হয়েছে। এই অংশকে সুরমা নদীর পানির প্রবাহের উৎসমুখ বলা হয়ে থাকে। সেখানে লোভার পানি ১১ দশমিক ৮২ মিটার থেকে বেড়ে আজ দুপুরে ১১ দশমিক ৯০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জৈন্তাপুর উপজেলার সারীঘাট পয়েন্টে সারী নদীর পানি ৯ দশমিক ১৪ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ১৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পয়েন্টে ধলাই নদের পানি ৮ দশমিক ৮২ মিটার থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৮৭ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সীমান্তের ওপারে ভারী বৃষ্টিপাতকে পানি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখছেন পাউবোর নদ-নদী পর্যবেক্ষকেরা। দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্যে বলা হয়েছে, সোমবারের প্রতিবেদনে সুরমা নদীর দুটো পয়েন্ট ও কুশিয়ারার শেওলা পয়েন্টে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া, কুশিয়ারা, সারী, লোভা ও ধলাই নদ-নদীর পানির পরিমাপ পয়েন্টসংলগ্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাত ছাড়াই বাড়ছে পানি।