যুবলীগ নেতাকে থানায় মারধর, ওসি প্রত্যাহার

মিজানুর রহমান
মিজানুর রহমান

এক যুবলীগ নেতাকে থানায় এনে মারধর করার অভিযোগে নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে ওই থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁর স্থলে জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ওসি শাহ নুর এ আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আলম তালুকদার (৩২) দুর্গাপুরের বাকলজোড়া ইউনিয়ন যুবলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও বাকলজোড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আলম তালুকদার কয়েকজনের সঙ্গে পৌর শহরের এমপির মোড় এলাকায় সড়কের পাশে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আবদুল কাইয়ুম (২৫) নামের ছাত্রদলের স্থানীয় এক কর্মী আরও দুজনকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। তাঁদের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল। বিষয়টি দেখে আলম তালুকদার কাইয়ুমকে মোটরসাইকেল থামাতে বলেন। কিন্তু কাইয়ুম চলে যেতে চাইলে আলম তালুকদার ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন কিছুটা দৌড়ে গিয়ে কাচারীমোড় এলাকায় কাইয়ুমকে আটক করেন। এ সময় কাইয়ুমের সঙ্গে থাকা দুজন দৌড়ে পালান। পরে আলম তালুকদার ও কাইয়ুমের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আলম পাশের একটি ঘরে নিয়ে কাইয়ুমকে জিজ্ঞাসাবাদসহ মারধর করেন। একই সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে আলম ও কাইয়ুমকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে কাইয়ুম আলমের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনেন।

ওই থানার একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, ওসি মিজানুর রহমান আলম তালুকদারকে থানায় বেধড়ক মারধর করেন। এতে আলম গুরুতর আহত হন। এরই মধ্যে থানা থেকে অদূরে থাকা আলমের বাড়ির স্বজনেরাও থানায় চলে আসেন। আলমকে পুলিশ ও স্বজনেরা দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টার দিকে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। কাইয়ুম থানায় আটক আছেন।

এ ব্যাপারে জানতে ওসি মিজানুর রহমানের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

তবে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওসি মিজানের কিছু কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার যে ধরনের আচরণ থাকার প্রয়োজন, মিজান সেখানে তা করেননি। মিজানকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়েছে।’ অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ বিষয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি আক্কাস উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।