কুশিয়ারার অমলসিদে আবার বাড়ছে পানি

দুই সপ্তাহের মাথায় বৃষ্টিপাত ছাড়াই আবার পানি বাড়ছে সিলেট অঞ্চলের অন্যতম দীর্ঘতম নদী কুশিয়ারার উৎসমুখ অমলসিদে। এর আগে ৩ আগস্ট বৃষ্টি ছাড়া পানি বাড়ছিল। পরে অবশ্য পানি কমছিল। একইভাবে পানি বাড়ছে সুরমার সঙ্গে মিলিত হওয়া সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিত লোভায়।

আজ শনিবার সকালে ও দুপুরে দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

কুশিয়ারা সিলেট জেলার ছয়টি উপজেলা হয়ে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার একাংশ দিয়ে প্রবহমান। নদীর উৎসমুখ ভারতের বরাক উপত্যকা। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ এলাকায় বরাক মোহনার এই অংশ কুশিয়ারার উৎসমুখ হিসেবে পরিচিতি।

পাউবো জানায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় একটানা ভারী বৃষ্টি হলে কুশিয়ারার উৎসমুখ অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ত। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। অমলসিদ পয়েন্টে আজ ও গতকাল দুদিনই ছিল বৃষ্টিপাতহীন। দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্যের ‘রেইনফল’ (বৃষ্টিপাত) অংশে ‘শূন্য’ উল্লেখ রয়েছে।

সিলেটে পাউবোর দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে জানা গেছে, অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। ৩ আগস্ট সেখানে কোনো বৃষ্টিপাত ছাড়া পানি বাড়লেও দুদিন পর ৫ আগস্ট থেকে কমছিল। গত ২৪ ঘণ্টা কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এরপরও পানি বাড়ে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ১৩ দশমিক ৮৫ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ছয়টার পরিমাপে দেখা যায় পানি বেড়ে ১৪ দশমিক ১০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টার পরিমাপে পানি আরও এক দফা বেড়ে ১৪ দশমিক ১৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় সেখানে ১৪ দশমিক ১৭ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

অমলসিদে বাড়লেও কুশিয়ারার শেওলা ও শেরপুর পয়েন্টে পানি কমেছে। স্থির হয়ে আছে নদীর মধ্যবর্তী অংশ ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। সেখানে সকাল ও দুপুরের পরিমাপ অনুযায়ী ৯ দশমিক ১৮ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।

কুশিয়ারার পাশাপাশি সিলেট ও সুনামগঞ্জ দিয়ে প্রবহমান আরেক দীর্ঘ নদী সুরমার দুটি পয়েন্টেও পানি বাড়ছে। কানাইঘাট ও সিলেট শহর পয়েন্টে অবশ্য গতকাল রাতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। কানাইঘাটে সুরমার পানি ১১ দশমিক ০৯ মিটার থেকে বেড়ে আজ দুপুরে ১১ দশমিক ৪৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সিলেট শহর পয়েন্টে ৮ দশমিক ৮৬ থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৯৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সুরমা-কুশিয়ারার পাশাপাশি সিলেটের সীমান্ত নদ-নদীর মধ্যে শুধু লোভার পানি বাড়ছে। সারী নদী ও ধলাই নদে পানি কমছিল। কানাইঘাটের লোভাছড়া হয়ে সুরমার সঙ্গে মিলিত হওয়া লোভা নদীর পানি ১২ দশমিক ১৭ মিটার থেকে বেড়ে আজ দুপুরে ১২ দশমিক ৭০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। বৃষ্টিপ্রবণ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা ধলাই নদে পানি কমছিল। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় ৮ দশমিক ৯২ মিটার থেকে নেমে আজ দুপুরে ৮ দশমিক ৮৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সারী নদীর জৈন্তাপুরের সারীঘাট পয়েন্টে পানি গতকাল সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ২৮ মিটার থেকে নেমে আজ সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ২০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টায় আরেক দফা কমে ৯ দশমিক ১৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে দুপুর ১২টায় পানি বেড়ে ৯ দশমিক ২২ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।