করোনা বুলেটিন চালুর সুপারিশ পরামর্শক কমিটির

১২ আগস্ট থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রচার বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ছবি: সংগৃহীত

দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত লাইভ স্বাস্থ্য বুলেটিন চালু রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এই সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে সপ্তাহে একবার গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকা উচিত বলেও মনে করে কমিটি।
কমিটির ১৭তম অনলাইন সভা থেকে এই সুপারিশ করা হয় বলে বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা।

১২ আগস্ট থেকে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রচার বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
কমিটি বাংলাদেশে করোনার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পক্ষে মত দিয়েছে। কমিটির সদস্যরা বলেছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তোলার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টিকার ট্রায়াল বাংলাদেশে হওয়া উচিত। দেশে টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হলে প্রথমত বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং তা প্রমাণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই টিকা সফল প্রমাণিত হলে সর্বাগ্রে পাওয়ার নিশ্চয়তাও থাকবে।

টিকার বিষয়ে কমিটি বলেছে, টিকা আন্তর্জাতিক বাজারে এসে গেলে তা কীভাবে প্রথমেই বাংলাদেশে নিয়ে আসা যায়, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনই করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে কী পরিমাণে টিকার প্রয়োজন, তা সংগ্রহে কত খরচ হবে বা বিনা মূল্যে পাওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে এখনই হিসাব করা প্রয়োজন। যেসব প্রতিষ্ঠান বা দেশ টিকার ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে আছে, তাদের সঙ্গে এখন থেকেই যোগাযোগ করা উচিত, যাতে টিকা মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতি পাওয়ামাত্রই বাংলাদেশ যেন তা পেতে পারে। টিকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সিরিঞ্জ পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপাদন বা কেনার প্রস্তুতি থাকতে হবে। টিকা পাওয়ার পর তা সংরক্ষণ, বিতরণ, লোকবল, সরঞ্জামসহ সব পরিকল্পনা বা ব্যবস্থাপনা এখনই ঠিক করে রাখা উচিত। কোন পর্যায়ের উচ্চঝুঁকিপূর্ণ মানুষ অগ্রাধিকার পাবে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অগ্রাধিকারে কোন জনগোষ্ঠী থাকবে, সেটাও নির্ধারণ করে রাখা প্রয়োজন। সাধারণত প্রথম ব্যবহারযোগ্য ভ্যাকসিন বা টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমেই বিতরণ করা হয়। একটি নির্দিষ্ট মাথাপিছু আয়ের নিচে যেসব দেশ, সেসব দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিনা মূল্যে নির্দিষ্টসংখ্যক টিকা দিয়ে থাকে। কোভিড-১৯ টিকার ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে, যেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই দ্রুত ব্যবস্থায় টিকা সংগ্রহ করার লক্ষ্যে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বা সে দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করা এবং প্রয়োজনীয় অগ্রিম অর্থ প্রদান করার প্রয়োজন হতে পারে।

কমিটি বলেছে, হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পর চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পর মানসম্মত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। অন্যথায় শুধু স্বাস্থ্যকর্মীরাই নন, তাঁদের পরিবার-পরিজনও কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
সরকারিভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফি পরিবর্তন করার পক্ষে মত দিয়েছে কমিটি। অবশ্য এ বিষয়ে কমিটির সুপারিশের দিনেই সরকারের পক্ষ থেকে করোনা পরীক্ষা ফি কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।