অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতার ৪৩ তম বার্ষিকী। সূর্যোদয়ের প্রাক্কালে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যে দিয়ে দিনটির সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। আমাদের আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতনিধিদের পাঠানো খবর:
খুলনা: গল্লামারী স্বাধীনতাসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সকালে খুলনা স্টেডিয়ামে সমাবেশ, কুচকাওয়াজ হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় সিনেমা হলে বিনা মূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিকেলে পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান এবং খুলনা স্টেডিয়ামে প্রদর্শনী ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বরিশাল: রাত ১২টা এক মিনিটে জেলা প্রশাসক কার্যালয়সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সঞ্চৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে বরিশালে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ছয়টায় বান্দ রোডের ত্রিশ গোডাউনের বধ্যভূমি সঞ্চৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সকাল সাড়ে আটটায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান ও কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস।
বেলা ১১টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা এবং মুক্তিযুদ্ধের দলিল ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, বরিশাল জিলা স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। একই সময় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে শিশু একাডেমী।
ফরিদপুর: সকাল সাড়ে সাতটায় শহরের গোয়ালচামট এলাকায় শহীদদের নামসংবলিত সঞ্চৃতি বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রা বের করা হয়। গণকবর জিয়ারত শেষে সকাল সাড়ে আটটায় ফরিদপুর স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ হয়। বেলা ১১টায় স্টেডিয়ামে হাজারো কণ্ঠে পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত। সাড়ে ১১টায় স্থানীয় কবি জসীমউদ্দীন হলে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা জানানো হয়।
কুষ্টিয়া: রাত ১২টা এক মিনিটে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা হয়। সকালে কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ সঞ্চৃতি স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন। এ ছাড়া জেলার বধ্যভূমিগুলোতেও ফুল দেওয়া হয়। বেলা ১১টায় জেলা স্টেডিয়ামে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা অনুষ্ঠানে’ কণ্ঠ মেলাতে হাজারও মানুষ জাতীয় সংগীত গেয়ে শোনান।
বাগেরহাট: লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন বাগেরহাটের হাজারো মানুষ। এই বিশেষ কর্মসূচির কারণে বাগেরহাট স্টেডিয়ামে ২৬ মার্চের নিয়মিত কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা অনুষ্ঠান যেন ভিন্ন মাত্রা পায়। বেলা ১১টা বাজামাত্রই হাজারো কণ্ঠে একসঙ্গে গেয়ে ওঠে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’। দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনি, শহীদদের সঞ্চরণে শহরের দশানী মুক্তিযোদ্ধা সঞ্চৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ।
রাজবাড়ী: দিনের শুরুতে শহরের রেলগেট শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সঞ্চৃতিফলকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সকাল আটটায় কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়ামে সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করা হয়। দুপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিকেলে কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম ও রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে যথাক্রমে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে বিভিন্ন প্রীতি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: সকাল নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে উপাচার্য আবদুল হাকিম সরকার বাংলাদেশের পতাকা ও সহ-উপাচার্য শাহিনুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে সঞ্চৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়। শেষে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঞ্চৃতির উদ্দেশে নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।