ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন দুই শিক্ষক?

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় এক শিশুকে ধর্ষণ করার অভিযোগে পাংশা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলামকে গতকাল মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একই দিন বিকেলে বিচারিক হাকিম নাছির উদ্দিনের কাছে শিশুটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত সোমবার শিশুটির ভাই বাদী হয়ে দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার আসামি অপর শিক্ষক প্রশান্ত কুমার মুখার্জি পলাতক।
এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রতিদিন বিকেলে দুই ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের কোচিং করিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ের কোনো একদিন বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে পড়া বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষকদের কক্ষে ডেকে নেন শিক্ষক প্রশান্ত কুমার মুখার্জি। এরপর তিনি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন। এরপর ওই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি মাঝেমধ্যেই শিশুটিকে ধর্ষণ করতে থাকেন। ঘটনাটি একদিন অপর শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম দেখে ফেলেন। বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সিরাজুলও শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ওই দিনের পর থেকে ওই দুই শিক্ষক পালাক্রমে শিশুটিকে ধর্ষণ করতে থাকেন। এক শিক্ষক ধর্ষণ করতেন এবং অপর শিক্ষক পাহারা দিতেন। চলতি বছর ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। এর পরও ওই দুই শিক্ষক হুমকি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করতে থাকেন।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ের দপ্তরির সন্দেহ হলে তিনি ঘটনাটি লক্ষ রাখতে থাকেন। শুক্রবার দুপুরে শিক্ষকদের কক্ষে প্রশান্ত কুমারের সঙ্গে তিনি ছাত্রীটিকে দেখে ফেলেন। পরে ওই শিশু ঘটনাটি সবাইকে জানিয়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রশান্ত কুমার ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলায় এর আগে দুটি স্কুল থেকে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সোবহান বলেন, ‘গত শনিবার বিষয়টি জানতে পেরেছি। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ায় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শেখ মো. আবদুল হান্নান বলেন, শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা আজ (গতকাল) সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিশুটির ধর্ষণের শিকার হওয়ার আলামত পাওয়া গেছে।
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মিয়া বলেন, সোমবার মামলা হওয়ার পরপরই আসামি সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।