৫৩ আসন পুনর্নির্ধারণ

noname
noname

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫৩টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল বুধবার বিকেলে পুনর্নির্ধারিত সীমানা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য ছাপাখানায় পাঠানো হয়েছে।
গতকাল নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এই সীমানা চূড়ান্ত করা হয়। তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে নারায়ণগঞ্জ, যশোর, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে।
বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, কমিশন মোট আসনের মাত্র ১৭ শতাংশে পরিবর্তন এনেছে। নির্বাচন কমিশন গত ৭ ফেব্রুয়ারি খসড়া আকারে ৮৯টি আসনের সীমানা বিন্যাস করে গেজেট প্রকাশ করে। ২৩ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত কমিশনের প্রস্তাবিত সীমানার ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দাবি-আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে গতকাল ৫৩টি আসনের সীমানা নতুন করে বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ৮৯টি আসন নতুন করে বিন্যস্ত করা হলেও গতকাল পর্যন্ত ৯৪টি আসনকে বিবেচনায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫৩টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সীমানা অপরিবর্তিত থাকলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি আসনের নম্বর পরিবর্তিত হয়েছে।
কমিশনের প্রস্তাবে ঢাকার ১৬টি আসন নতুন করে বিন্যাসের সিদ্ধান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন এসেছে ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১৯ আসনে। বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে নারায়ণগঞ্জে। সোনারগাঁও উপজেলা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ এবং ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশন তাদের প্রস্তাবিত বিন্যাসকে আমলে নেয়নি। কমিশন নারায়ণগঞ্জ সিটির বন্দর থানা ও সোনারগাঁও নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩, ফতুল্লা থানার সঙ্গে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ এবং সিটির সদর থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন গঠনের প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবিত এই তিন আসনের ভোটার সংখ্যার হিসাব ছিল যথাক্রমে তিন লাখ ৪১ হাজার ৬২০, চার লাখ ৫১ হাজার ২৪০ এবং তিন লাখ ৩৮ হাজার ৪৮২। কিন্তু বর্তমানে যা করা হয়েছে, তাতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভোটার সংখ্যা দাঁড়াবে ছয় লাখের বেশি।
নারায়ণগঞ্জের সাবেক সাংসদ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহকারী আইনবিষয়ক সম্পাদক তৈমুর আলম খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য কমিশন পরিকল্পিতভাবে এই সীমানা তৈরি করেছে।
অভয়নগর ও কেশবপুর উপজেলা এবং মনিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন নিয়ে বিদ্যমান যশোর-৬ আসনটি লম্বালম্বিভাবে ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ হওয়ায় কমিশন এ আসনটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। এটিতে পরিবর্তন আনতে গিয়ে যশোর-৩, যশোর-৪, যশোর-৫ ও যশোর-৬ আসনে ভাঙচুর করতে হয়েছে।
পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-১, কাউখালী, ভাণ্ডারিয়া ও জিয়ানগর উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-২ এবং মঠবাড়ীয়া উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-৩ আসন গঠন করা হয়েছে। এই তিনটি আসনেও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। প্রথম আলোর পিরোজপুর অফিস জানায়, নতুন করে আসন বিন্যাস করায় পিরোজপুর সদর, জিয়ানগর, ভাণ্ডারিয়া ও কাউখালীর বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
খসড়ায় কুমিল্লার-৬, ৭, ৮ ও ১০ আসন নতুন করে বিন্যাসের প্রস্তাব করা হয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাংসদ আ হ ম মুস্তফা কামাল ও নাছিমুল চৌধুরী আপত্তি জানান। শেষ পর্যন্ত কমিশন এই চারটি আসনে পরিবর্তন আনলেও খসড়া প্রস্তাবের সঙ্গে চূড়ান্ত বিন্যাসের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।