নাগেশ্বরীতে মাদকাসক্ত বাবার হাতে ছেলে খুন সদরে শিশুর লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌর এলাকায় মাদকাসক্ত এক বাবার হাতে আলমগীর নামের সাত বছরের এক শিশু ও সদর উপজেলায় দুর্বৃত্তের হাতে পিতৃহারা শিশু মহেন্দ্র রবিদাস (১২) খুন হয়েছে। এ দুটি ঘটনায় পুলিশ আলমগীরের বাবাসহ চারজনকে আটক করেছে।
নাগেশ্বরী থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, নাগেশ্বরী পৌরসভার বাগডাঙ্গা গুণ্ডিরচর গ্রামের মাদকাসক্ত আফজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রেহেনা বেগমের তিন সন্তান। স্বামীর মাদক সেবনের জের ধরে কলহের এক পর্যায়ে গত রোববার সকালে রেহেনা সন্তানদের নিয়ে ভিতরবন্দ গ্রামে তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। বিকেলে আফজাল শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ছোট ছেলে আলমগীরকে জোর করে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন।
প্রতিবেশীরা জানান, আলমগীর বাবার সঙ্গে আসতে না চাওয়ায় সন্ধ্যায় ঘরের দরজা বন্ধ করে তিনি শিশুটিকে বেদম মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে আর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা গ্রামবাসীকে ডেকে ঘরের দরজা ভাঙে। এ সময় ঘরের বেড়া কাটা ছিল। কাউকে না পেয়ে গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘরের মেঝে খুঁড়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। এদিকে গভীর রাতে পাশের ভুরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী এলাকা দিয়ে পালানোর সময় এলাকাবাসী ছুরিসহ আফজালকে আটক করে পুলিশে দেয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাগেশ্বরী থানার ওসি আবদুর রশিদ বলেন, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের মা রেহেনা বেগম গতকাল স্বামী আফজালকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। আফজাল ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে কুড়িগ্রাম শহরের মিস্ত্রিপাড়া ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতুর পাশের ধানখেত থেকে গতকাল মহেন্দ্র রবিদাসের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। নিহত মহেন্দ্র শহরের ঘোষপাড়ার মৃত চুনমন রবিদাসের ছেলে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শিশুটির চাচি বেলি রানীসহ তিনজনকে আটক করেছে।
এদিকে পিতৃহারা শিশুটিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গতকাল দুপুরে দ্রুত প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রুহানী জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে।