তিস্তায় হঠাৎ পানিপ্রবাহ, সচল সেচ প্রকল্প

তিস্তায় আজ মঙ্গলবার পানিপ্রবাহ বাড়ায় দিনাজপুর সেচখালে পানি সরবরাহ বেড়েছে। ছবিটি খালের চাঁদের হাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
তিস্তায় আজ মঙ্গলবার পানিপ্রবাহ বাড়ায় দিনাজপুর সেচখালে পানি সরবরাহ বেড়েছে। ছবিটি খালের চাঁদের হাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

তিস্তায় পানিপ্রবাহ বেড়েছে। ফলে পানির অভাবে অকার্যকর হতে বসা দেশের বৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প সচল হয়ে উঠেছে। অপ্রত্যাশিতভাবে পানি পেয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রকল্প এলাকার কৃষকেরা।
আজ মঙ্গলবার ব্যারেজ পয়েন্টে পৌঁছেছে তিন হাজার ছয় কিউসেক পানি। দুপুরে নীলফামারীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দিনাজপুর সেচখালের সুবিধাভোগী কৃষকদের খেতখামারে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে।
জেলা সদরের বিশমুড়ি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাতেও  ভাবি নাই সকালে উঠি এত পানি পাওয়া যাবে। সাত দিন আগে অল্প  পানি পাইছিলাম। এর আগত শ্যালো দিয়া সেচ দিছি। আইজ পানির অভাব নাই। এই রকম পানি পাইলে হামার আবাদ করির কোনো অসুবিধা হইবে না।’
একই গ্রামের কৃষক তোফায়েল হোসেন বললেন, ‘এই গ্রামের অনেক জমির ধান পানির অভাবে নষ্ট হইয়া গেইছে, এখন পানি দিছে। আইজ যে পানি পাইছি আগামী ১০ দিন পানি না দিলেও অসুবিধা হইবে না।’

তিস্তায় আজ মঙ্গলবার তিন হাজার ছয় কিউসেক পানি উঠেছে। ছবি: প্রথম আলো
তিস্তায় আজ মঙ্গলবার তিন হাজার ছয় কিউসেক পানি উঠেছে। ছবি: প্রথম আলো


সদরের ইটাখোলা গ্রামের আবু বক্কর জানালেন, গত ২০ দিনের ব্যবধানে তাঁর দুই বিঘা জমির পাটবীজ দুবার নষ্ট হয়ে গেছে। দুই বিঘা জমির বোরো ধানগাছ পানির অভাবে নষ্ট হয়েছে।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি নেমে আসে প্রায় শূন্যের কোঠায়। তিস্তায় দেখা দেয় স্মরণকালের ভয়াবহ পানিশূন্যতা। তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রধান সেচখাল হয়ে দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া খাল প্রায় শুকিয়ে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পের আওতায় ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে পালাক্রমে সেচ প্রদান করে। এটি লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম। এতে ওই প্রকল্প এলাকার তিন জেলার ১২ উপজেলার বোরো চাষিরা বিপাকে পড়েন। পানির জন্য শুরু হয় তাঁদের হাহাকার।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে তিস্তার পানি কমতে কমতে ৫০০ থেকে ৫৫০ কিউসেকে দাঁড়ায়। অথচ এ সময় এ নদীতে স্বাভাবিকভাবে গড়ে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কিউসেক পানি থাকা প্রয়োজন। গত রোববার ৬৮৮ কিউসেক এবং গতকাল সোমবার পানিপ্রবাহ ছিল ৮৩০ কিউসেক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের  নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বলেন, হয়তো ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় পানি বেড়েছে।