সাতক্ষীরায় হিট স্ট্রোকে মরছে ঘেরের চিংড়ি

তীব্র দাবদাহে ঘেরের পানি শুকিয়ে হিট স্ট্রোকে সাতক্ষীরায় বাগদা চিংড়ি মরে যাচ্ছে। বেশি মরছে চিংড়ির পোনা। এতে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দাবদাহ দীর্ঘায়িত হলে চিংড়িশিল্পে বিপর্যয়ের পাশাপাশি চাষিরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে ৫৫ হাজার ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। চিংড়িচাষিরা জানান, জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁরা জমি প্রস্তুত করেন। ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে ঘেরে চিংড়ির পোনা ছাড়া শুরু করেন। কিন্তু চলতি মৌসুমের শুরু থেকে অর্থাৎ মার্চের শেষ থেকে শুরু হয় তীব্র দাবদাহ। এতে ঘেরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি এমনকি ঘেরের মাটিও গরম হয়ে চিংড়ি পোনা মারা যাচ্ছে। বড় চিংড়িও মারা যাচ্ছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দুর্গাবাটি এলাকার অসিম মণ্ডল জানান, তার পাঁচ বিঘার ঘেরে মৌসুমের শুরুতে ১০ হাজার বাগদা চিংড়ির পোনা ছেড়েছিলেন। কিন্তু দাবদাহে তাঁর ঘেরের সব চিংড়ি মরে গেছে। পদ্মপুকুর গ্রামের আবদুল আজিজ সরদার জনান, তাঁর ১০ বিঘা ঘেরের ছোট-বড় সব চিংড়ি মরে যাচ্ছে। মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তিনি ঘের করেছেন। দাবদাহ দীর্ঘায়িত হলে তাঁর ঘেরের সব চিংড়ি মরে যাবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ জানান, সাধারণ চিংড়িঘেরে তিন ফুট পানি রাখতে হয়। কিন্তু তীব্র দাবদাহে অধিকাংশ ঘেরের পানি শুকিয়ে ছয় ইঞ্চি থেকে এক ফুট হয়ে গেছে। ফলে শুধু পানি নয়, ঘেরের মাটিও গরম হয়ে যাচ্ছে। সাধারণত চিংড়ি ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ সহ্য করতে পারে। সেখানে বর্তমানে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চলছে। বৃষ্টি হচ্ছে না। বাড়ছে লবণাক্ততার পরিমাণ। পানি ও মাটির গরমে চিংড়ি হিট স্ট্রোকে মরে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জেলার অধিকাংশ চিংড়িঘেরে এ আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে।