বিপুল ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা

বিপুল ভট্টাচার্য
বিপুল ভট্টাচার্য

একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা ও লোকসংগীতশিল্পী প্রয়াত বিপুল ভট্টাচার্যকে ফুল আর আন্তরিক ভালোবাসায় শেষ শ্রদ্ধা জানালেন সর্বস্তরের মানুষ। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী বিপুল ভট্টাচার্যের মরদেহ নিয়ে আসা হলে সংগীতশিল্পী, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের ঢল নামে। শুরুতেই ঢাকার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিতাভ পরাগ তালুকদারের নেতৃত্বে বিপুল ভট্টাচার্যকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বিপুল ভট্টাচার্য গত শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় ৬১ বছর বয়সে ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। মুক্তির আলো ওই ঝরছে’ এবং ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গণ-আন্দোলনের দুটি গান গেয়ে বিপুলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী আবদুল জব্বার, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, ফকির আলমগীর, মলয় কুমার গাঙ্গুলী, বুলবুল মহলানবীশ প্রমুখ। এ সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘বিপুলের মতো একজন বড়মাপের শিল্পীকে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হয়নি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’ সংগীতশিল্পী আবদুল জব্বার বলেন, ‘বেঁচে থাকতে বিপুলকে রাষ্ট্র সম্মান দেয়নি। এখন যদি সরকার তাঁর পরিবারের দায়িত্ব নেয়, তাতেও বিপুলকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এই আয়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, বিটিভির মহাপরিচালক ম. হামিদসহ রামেন্দু মজুমদার, গোলাম কুদ্দুছ, শংকর সাঁওজাল, কুদ্দুস বয়াতিসহ সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রিয় মানুষটিকে কফিনে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। শ্রদ্ধা জানানোর পর দুপুরে বিপুল ভট্টাচার্যের মরদেহ পোস্তগোলার শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিপুল ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৫৫ সালে কিশোরগঞ্জে। ১৯৭১ সালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিপুল ভট্টাচার্যের গাওয়া গান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেরণা জোগায়। তিনি শরণার্থী শিবিরের হাজারো মানুষের মনে সাহস সঞ্চার করেছিলেন গানের মাধ্যমে।